ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,১৫ মে : জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ মিয়ানমারের মত মানবতার বিরুদ্ধে এই ধরণের অপরাধ করে যাতে আর কেউ পার না পায় তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
সভায় নিরাপত্তা পরিষদ প্রতিনিধিদলের গত ২৮ এপ্রিল থেকে ১ মে পর্যন্ত রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফরের উপর ব্রিফিং করা হয়।
কুয়েতের রাষ্ট্রদূত তার ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক এবং কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের মানবিক সহযোগিতা ও আশ্রয় প্রদানের জন্য তিনি নিরাপত্তা পরিষদ প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে সাধুবাদ জানান এবং ভূয়সী প্রশংসা করেন। এক্ষেত্রে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের আসন্ন বর্ষা মৌসুমে সহযোগিতার হাত আরো প্রসারিত করার প্রতি গুরুত্বরোপ করা হয়। তিনি রোহিঙ্গাদের প্রতি সংঘটিত সহিংসতাকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে অভিহিত করেন।
পেরুর স্থায়ী প্রতিনিধি মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সূচি, সিনিয়র জেনারেল মিন অং হালাইংসহ মিয়ানমার সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি তুলে ধরেন। ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, এসব বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে, নিরাপত্তার সঙ্গে, স্বেচ্ছায় ও সম্মানের সঙ্গে নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসন; এই সমস্যার শিকড় খুঁজে বের করা এবং রাখাইন অ্যডভাইজরি কমিশন এর সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়।
যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধি তার ব্রিফিংয়ে উত্তর রাখাইন প্রদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে গ্রামের পর গ্রামে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন দেখার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদল ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্টের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারকের বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান। মিয়ানমার সরকার যাতে মিয়ানমারে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদলের অবাধ ও নিরাপদ প্রবেশ এবং বাধাহীন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করে সে বিষয়ের প্রতি এই প্রতিনিধিদল বিশেষভাবে জোর দেন।
এছাড়া শিশু ও নারীসহ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সকল সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার জন্য মিয়ানমারের সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় জাতিসংঘ পরিদর্শন দল। রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচারের বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উত্থাপনের উল্লেখ করেন কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি।