ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কস,যশোর প্রতিনিধি,১১ মার্চ : ওরা দু’জন মামাতো-ফুফাতো বোন। খেলাধুলা-চলাফেরা সবকিছুই করত একসঙ্গে। এমনকি পরীক্ষায় কে প্রথম হবে, তা নিয়েও চলত প্রতিযোগিতা। তবে আর একসঙ্গে স্কুলে যাওয়া হলো না দুই বোনের। ঘাতক ট্রাক কেড়ে নিল দুই বোনের প্রাণ। দুই স্কুলছাত্রী নিহত হওয়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। চোখে জল আর কণ্ঠে ক্ষোভ নিয়ে তাদের পরিবারের দাবি, এমন নির্মম ঘটনার জন্য দায়ীরা যেন শাস্তি পায়।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গতকাল শনিবার সকালে যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া কলেজের প্রভাষক ও বাগুড়ি গ্রামের আলমগীর হোসেন মেয়ে ফতেমা ওয়াদুদ জান্নাত রোজা (১২) ও ভাগ্নি জেরিন জান্নাত কুহিলীকে (১১) মোটরসাইকেলে করে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা হন। বাগআঁচড়া বাজারের দিকে আসতে ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের সামনে সাতক্ষীরাগামী একটি বালুবোঝাই ট্রাককে সাইড দেন। এ সময় একটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যান তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে আলমগীর ডানপাশে এবং দুই বোন বাঁ পাশে পড়ে যায়। এ সময় চলন্ত ট্রাকের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এতে গুরুতর আহত হন আলমগীর। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
নিহত রোজা বাগআঁচড়া বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম ও কুহিলী ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। কুহিলী একই এলাকার সাতমাইল গ্রামের ইব্রাহিম মোল্লার মেয়ে। দুর্ঘটনার খবর শুনে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মণ্ডল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনার পরপরই বাগআঁচড়া বাজারে সম্মিলিত গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ডা. আফিল উদ্দিন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। জানাজা শেষে বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দুই বোনকে পাশাপাশি দাফন করা হয়।
নাভারণ হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক পলিটন মিয়া জানান, বালুবোঝাই ট্রাকটি আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে আনা হয়েছে। এ সময় চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়।
বাগআঁচড়া সম্মিলিত গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বলেন, রোজা সপ্তম শ্রেণির বকুল শাখার সবার সেরা ছিল। এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শুধু তার পরিবার নয়, আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।