ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,০৯ মার্চ : রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় মিয়ানামারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চিকে দেওয়া মর্যাদাপূর্ণ পদক ফিরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম। জনগণের অধিকার আদায়ে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সাহসী নেতৃত্ব দেওয়ার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে এই পদকে ভূষিত করা হয়েছিল। তবে বুধবার মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ জানায়, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ‘গণহত্যার পাহাড় সমান প্রমাণ’ থাকা সত্ত্বেও এ বিষয়ে তিনি নিষ্ফ্ক্রিয় থাকায় তাকে দেওয়া পদক প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। খবর এএফপি ও ওয়াশিংটন পোস্টের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়া মানুষের স্মৃতি রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে হলোকাস্ট মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয়। হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া এলি উইজেলের নামে মানবাধিকারের ওপর পদক প্রবর্তন করে কর্তৃপক্ষ। জীবনের পুরোটা সময় নির্যাতিত মানুষের জন্য কাজ করায় তিনিই প্রথমবার এই পদক পান। গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে দীর্ঘদিন গৃহবন্দি থাকা অং সান সু চিকে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ছয় বছর আগে এই পদক দেওয়া হয়। পদক প্রত্যাহারের বিষয়টি অবহিত করে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সু চিকে লেখা এই চিঠিতে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ পরিস্কার ভাষায় বলেছে, ‘২০১৬ ও ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর হামলার তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর আমাদের মতো অন্যরা যারা মানুষের মর্যাদা ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য আপনার প্রশংসা করে থাকে, সবাই প্রত্যাশা করেছিল সেনাবাহিনীর বর্বর অভিযানের নিন্দা ও তা বন্ধ করতে আপনি কিছু না কিছু করবেন এবং শিকারে পরিণত হওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করবেন।’ কিন্তু তা করেননি সু চি। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি জাতিসংঘ তদন্তকারীদের সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং রোহিঙ্গাবিরোধী বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েছে। রাখাইনে গণহত্যা ও প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার খবর প্রকাশে সাংবাদিকদের বাধা দিয়েছে তারা। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যেসব অপরাধ করেছে এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যে ধরনের নৃশংসতা চালিয়ে, তার প্রতি সু চির নৈতিক সমর্থন ছিল।