ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,১৮ ফেব্রুয়ারি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চা শ্রমিকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পাতা তুলেন, বাগানের পরিচর্যা করেন। তাদের কল্যাণে আপনাদের (চা বাগান মালিক) নজর দিতে হবে। পাশাপাশি শ্রমিকরাও বেশ আন্তরিকতা দিতে তাদের কাজটুকু করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বাংলাদেশ চা প্রদর্শনী ২০১৮-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা একটি জনপ্রিয় পানীয়। দেশ বিভাগের আগে সিলেটের মালনীছড়ায় চা বাগান ছিল। সেখানে উপমহাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের এনে চায়ের চাষ করানো হতো। ১৯৫৬ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করে। শাসনতন্ত্র রচনা করে। কিন্তু, বঙ্গবন্ধু সে সরকার থেকে এক বছর পর দল গোছানোর জন্য বেরিয়ে যান। এরপর তাকে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়। তিনিই শ্রীমঙ্গলে চা বোর্ডের অফিস প্রতিষ্ঠাসহ মতিঝিলে এর একটি অফিস করেন। সেই জায়গায় আজ বহুতল ভবন করার জন্য আমি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে এসেছি। চা বাগান মালিকদের ১০০ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিকানা সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে চা উৎপাদনেও আমরা যথেষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। চা মালিকদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষেতে জেনারেটরের ওপর থেকে ট্যাক্স তুলে নেই। চা শ্রমিক ও তাদের পরিবারের স্বাস্থ্য, শিক্ষা , গর্ভবর্তী মায়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
এ সময় চাবাগান মালিকদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে চা শ্রমিকদের ঘরবাড়ি নির্মাণের ওপরে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্প করেছি। কেউ কুঁড়েঘরে থাকবে না। চা শ্রমিকরাও যাতে ঘরবাড়ি পায় সে জন্য গৃহায়ণ তহবিল থেকে ২% সার্ভিস চার্জের মাধ্যমে চা বাগানের মালিকদের ঋণ দেওয়া হবে। এই ঋণ ৫% এর ওপর আদায় করা যাবে না। আর গৃহায়ণ তহবিলের শর্ত অনুসারে, প্রতিটি বাড়িতে বিনা খরচে একটি করে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণ করে দিতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি মজবুত করতে হলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে। চায়ের গবেষণা ও এর বহুমুখী ব্যবহার বাড়াতে নজর দিতে হবে। দেশে বর্তমানে চায়ের উৎপাদন সাড়ে ৮ কোটি কেজি। ১৯৭০ সালে ৩ কোটি কেজি চা উৎপাদন হতো। ২০২৫ সাল নাগাদ ১৪ কোটি কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগোচ্ছি।
চা প্রদর্শনী উপলক্ষে ‘লেবার ওয়েলফেয়ার ইন টি গার্ডেনস ইন বাংলাদেশ’, ‘প্রসপেক্ট অব টি ট্যুরিজম ইন বাংলাদেশ’ ও ‘টি অ্যান্ড ইওর হেলথ’ শীর্ষক বিষয়ে ৩টি টিভি টকশোর আয়োজন করা হবে।
এ ছাড়া প্রতিদিনই থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের পাশাপাশি বান্দরবান, শ্রীমঙ্গলের অঞ্চলের মানুষরা তুলে ধরবেন আঞ্চলিক সংস্কৃতি। উদ্বোধনী দিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা এবং ১৯ এবং ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মেলা চলবে। দর্শনার্থীদের কোনো প্রবেশমূল্য লাগবে না।