ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,লালমনিরহাট প্রতিনিধি,২৫ জানুয়ারি : লালমনিরহাটে প্রেম করে বিয়ে করায় এক গৃহবধুকে মারধর করে রক্তাক্ত শরীরে ও গোপনাঙ্গে মরিচের গুড়া দিয়ে আটকিয়ে রেখে নিযার্তনের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার আহত ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করে প্রথমে আদিতমারী হাসপাতালে পরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে জেসমিন আক্তার নামের ওই গৃহবধুকে আদিতমারী উপজেলার বালাটারী গ্রামে নুর ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। আহত গৃহবধু জেসমিন আক্তার ওই গ্রামের বাদশা আলমের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বালাটারী গ্রামের হাফেজ আলীর ছেলে বাদশা আলম আড়াই বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন একই উপজেলার রথেরপাড় গ্রামের জাফর উদ্দিনের মেয়ে জেসমিন আক্তারকে। বাবা হাফেজ আলী মেনে নিলেও বাদশা আলমের অপর দুই ভাই নুর ইসলাম ও নুর আলম এ বিয়ে মেনে না নেয়ায় বাদশা-জেসমিন দম্পত্তি আলাদা বাড়ি করেন।
ওই ঘটনার জের ধরে জেসমিনকে বাড়ি ছাড়া করতে প্রায়ই মারপিট করত নুর আলম ও নুর ইসলাম। এ নিয়ে কয়েক দফায় গ্রাম্য শ্যালিস বৈঠক হয়। মঙ্গলবার বিকেলে স্বামী বাদশা আলম বাজারের গেলে জেসমিন নুর আলমদের বাড়ির সামনে বেড়াতে যায়। এ সময় তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় স্বামীর বড় ভাই নুর ইসলাম।
এরপর শুরু হয় লোহার রড দিয়ে বেধম মারপিট। স্পর্ষকাতর স্থানসহ শরীর বিভিন্নস্থানে কামড়ে রক্তাক্ত জেসমিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে নুর আলমের ঘরে আটকে রাখা হয়। এরপর মরিচর গুড়া মিশ্রিত পানি জেসমিনের গোপনাঙ্গসহ সমস্থ শরীরে ঢেলে দেন ওই বাড়ির মহিলারা। স্থানীয়দের খবরে স্বামী বাদশা আলম ও মা রাশেদা বেগম আহত জেসমিনকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকে দেখা করতে দেয়া হয়নি।
অবশেষে থানা পুলিশ আজ বুধবার ভোরে জেসমিনকে ওই ঘর থেকে উদ্ধার করে প্রথমে আদিতমারী হাসপাতালে পরে আশংকাজনক অবস্থায় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় জেসমিনের স্বামী বাদশা আলম বাদি হয়ে আদিতমারী থানায় একটি লিখত অভিযোগ দায়ের করেন।
গৃহবধু জেসমিন আক্তার জানান, স্বামীর ভাইরা ডেকে নিয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই লোহার রড দিয়ে মারপিট ও কামড়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ ছিড়ে নিয়েছে। এরপরও মরিচের গুড়া মিশ্রিত পানি গোপনাঙ্গসহ সমস্থ শরীরে দিয়েছে। এরপর আর কিছুই বলতে পারেন না তিনি।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সামিহা তাসনিম মুনমুন জানান, গৃহবধুর সমস্থ শরীরের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রসাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কিছুটা কমলেও চোখে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আদিতমারী থানার ওসি হরেশ্বর রায় জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।