ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,২৯ ডিসেম্বর : রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মাঠপর্যায়ের সার্বিক কার্যক্রম সুনির্দিষ্টি করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সই হতে যাচ্ছে একটি চুক্তি। এটির খসড়া চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ। শিগগিরই খসড়াটি মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর)পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে রোহিঙ্গা বিষয়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রথমটি ছিল রোহিঙ্গা বিষয়ক ন্যাশনাল টাস্কফোর্স এর বৈঠক এবং পরেরটি ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণী আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক। এসব বৈঠকে এই খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
মেঘনায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের পর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মাঠপর্যায়ে যেসব কাজ চলবে, তার চুক্তির খসড়া আমরা চূড়ান্ত করেছি। এটি খুব তাড়াতাড়ি মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ চুক্তিতে কীভাবে রোহিঙ্গাদের পাঠানো হবে, কয়টি ক্যাম্প থাকবে, গাড়িতে নাকি নেৌকায় পাঠানো হবে, কোন পয়েন্ট দিয়ে ক’জন যাবে- এসবের খুঁটিনাটি আমরা উল্লেখ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে যাচাই করার জন্য প্রথমে আমরা তালিকা পাঠাব মিয়ানমারের কাছে। তারা সেগুলো যাচাই করে দিলে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত, রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের কারণে গত চার মাসে সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেন। আগে থেকেই থাকা রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশে মোট রোহিঙ্গার সংখ্যা বর্তমানে ১০ লাখ। তাদের ফেরাতে প্রথমে অ্যারেঞ্জমেন্ট নামের একটি চুক্তি সই হয়। এ চুক্তির আওতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন তদারকি করতে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে প্রত্যেক পক্ষে ১৫ জন করে ৩০ সদস্যবিশষ্টি যেৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। এ গ্রুপের কার্যপরিধিও সই হয়েছে। এবার মাঠপর্যায়ে কাজের চুক্তি চূড়ান্ত হল।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হবে। রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কার্যক্রম ২৩ জানুয়ারির মধ্যে হওয়ার কথা ছিল, সেটি দেরি হতে পারে। তবে দেরি হলেও এক সপ্তাহ হতে পারে, এর বেশি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আসছে নতুন বছরে এই বছরের মতোই মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে একক প্রচেষ্টায় চুক্তি করেছে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বোঝা যায়, আমরা অন্য কারও মুখাপেক্ষী নই। তারপরও গুরুত্বপূর্ণ যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো মিয়ানমারে গণতন্ত্র নিয়ে সোচ্চার ছিল, তারা রোহিঙ্গা ইসু্যতেও কথা বলেছে। তাদের ভূমিকাই এখানে বড়।
রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি এবং স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গা পাঠানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের নিরাপদ পরিবেশে ফেরত পাঠানোর জন্যই চুক্তি করেছি। এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন করার অবকাশ নেই।
রোহিঙ্গা নিবন্ধন নিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন। বুধবার পর্যন্ত ৯ লাখ ২৩ হাজারের বেশি নিবন্ধন হয়ে গেছে।