প্রত্যেক ব্যাংকে অভিযোগ বক্স রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। শনিবার পাঁচদিনব্যাপী ব্যাংক মেলার শেষদিনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
গভর্নর বলেন, মেলা শুরুর আগে অনেকের মধ্যে সংশয়-উৎকণ্ঠা ছিল। কিন্তু বলতে দ্বিধা নেই, সকল প্রশ্ন ও উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে অত্যন্ত সফলভাবেই মেলা শেষ হয়েছে। যথেষ্ট সাড়া পেয়েছি আমরা। এসময় রাজধানীর পাশাপাশি বিভাগীয় শহরে ব্যাংকিং মেলার আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি গভর্নর থাকাকালীন যাতে অন্তত একবার বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যাংকিং মেলা হয়, সে ব্যবস্থা করুন।
আগামীতে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, মেলায় নতুন নতুন পণ্য নিয়ে হাজির হবেন। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন অফার নিয়ে আসবেন। গ্রাহক ঋণ নিলে একটু সুবিধা পায় সেটা খেয়াল রাখবেন।
তিনি বলেন, মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল গ্রাহক-ব্যাংকার্স মুখোমুখি অনুষ্ঠান। যেখানে ১০-১২টি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সরাসরি প্রশ্ন করতে পেরেছে গ্রাহক। এর আগে বেশিরভাগ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে গ্রাহক কথা বলা তো দূরের কথা তাদেরকে কাছ থেকে দেখার সুযোগও হয়নি। মেলার মাধ্যমে সেই সুযোগটি হয়েছে। সরাসরি প্রশ্ন করে জানাতে পেরেছেন তাদের সমস্যা, অভিযোগ ও দাবি-দাওয়া। নির্বাহীরাও বুঝতে পেরেছেন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা। মেলার সব আয়োজনই মানুষকে মুগ্ধ করেছে, আনন্দ দিয়েছে ও ব্যাংকিং সেবা দিয়েছে বলে মনে করি।
দেশের অর্থনীতিকে আরো বেগবান করাই আমাদের মূল লক্ষ্য উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, আমরা নিত্যদিনের আর্থিক সেবা ও পণ্য সহজে পৌঁছে দিতে চাই সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়। এ মেলা জাতীর সামনে সেই অক্লান্ত নিত্যদিনের সেবার কথা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। ব্যাংক যে শুধু ধনিদের জন্য নয়, এটি সকল মানুষের জন্য তা তুলে ধরা হয়েছে।
ব্যাংকগুলোও আজ শিখতে পেরেছে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বিত্তবানদের পাশাপাশি বিত্তহীনদের মাথার ওপরও ছাতা খুলে ধরা উচিৎ। মানুষ জানতে পেরেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে তাদের আর্থিক উন্নতির একনিষ্ঠ বন্ধু। প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই মেলা মানুষের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দিতে পেরেছে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মুহা. রাজী হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক সফল খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। বক্তব্য রাখেন, মেলার প্রধান সমন্বয়কারী বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরূপাক্ষ পাল, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীরা।