চুরির অপবাদে শিশুকে ঝুলিয়ে নির্যাতন

SHARE
kustia_93622ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি,১০ আগস্ট :  কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় মোবাইল চুরির অপবাদে আমগাছে বেঁধে শিশু জুলেয়কে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকেলে দিকে নির্মম এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
জুয়েলকে মারধরের ঘটনায় গতকাল রাতেই কুমারখালী থানায় মামলা হয়। এই মামলায় দুজনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।
তারা হলেন ছেঁউড়িয়া এলাকার তানজেল (৩৫) ও তার শাশুড়ি রোকেয়া খাতুন (৪৮)।
স্থানীয় লোকজন জানায়, বছর তিনেক আগে জুয়েলের বাবা মারা যান। মা অন্যত্র চলে যান। জুয়েলরা তিন ভাই মিলে ছেঁউড়িয়া এলাকায় থাকে। বড় ভাই রব্বেল (২১) স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করেন। জুয়েল আরেকটি দোকানে কাজ করে। গত বৃহস্পতিবার ছেঁউড়িয়া এলাকার বাসিন্দা তানজেলের এক নিকটাত্মীয়ের মোবাইল ফোন সেট চুরি যায়। জুয়েলসহ আরেক শিশুর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আনেন তিনি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে জুয়েল বলে, গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে তাকে এক যুবক দোকান থেকে ধরে তানজেলের বাড়ির সামনে নিয়ে যান। তার দুই হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে আমগাছের সঙ্গে টানানো হয়। মোবাইল ফোন সেট চুরির অভিযোগ তুলে তানজেল আমগাছের ডাল ভেঙে তাকে মারতে থাকেন।
জুয়েল জানায়, মারধরের সময় আশপাশের লোকজন দাঁড়িয়ে ছিল। কেউ কিছু বলেনি। মারধরে তানজেলের সঙ্গে মিরু ও এক নারী যোগ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী আবদুল মান্নান বলেন, তিনি ঠেকাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বাধা দেন তানজেল। চোরের পক্ষ নেয়ার অভিযোগ তুলে ধাক্কা মারেন।
খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থলে যান জুয়েলের ভাই রব্বেল। তিনি জুয়েলকে উদ্ধার করে সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হোসাইন মো. শিহাব জানান, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের চিহ্ন দেখা গেছে। শরীরের অনেক জায়গা ফোলা। দেখে মনে হয়েছে, শক্ত কিছু দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়েছে। আঘাতের স্থানগুলোতে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। তাকে ব্যবস্থাপত্র দেয়া হয়েছে।
জুয়েলকে মারধরের ভিডিও সন্ধ্যার পর সাংবাদিকদের হাতে আসে। বিষয়টি জানতে পেরে রাতে কুমারখালী থানার পুলিশ তানজেল ও তার শাশুড়িকে আটক করে থানায় নেয়।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল খালেক বলেন, জুয়েলকে মারধরের অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলায় তানজেল ও তার শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মারধরের ভিডিওচিত্রে তানজেল ও তার শাশুড়ি রোকেয়াকে দেখা গেছে।