ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,রাজশাহী প্রতিনিধি,২৮ জুলাই : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্য পরিচয়ে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের মামলায় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামরুল হাসান সুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
দুই দফা রিমান্ড শেষে আজ বৃহস্পতিবার কামরুল হাসানকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক মো. সফিকুল ইসলাম। অপরদিকে কামরুল হাসানের পক্ষে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. রায়হান উল ইসলাম জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রাজশাহী জেলার বাগমারা-মোহনপুর আসন থেকে দুইবার নির্বাচিত প্রাক্তন এমপি মো. আবু হেনা বাদী হয়ে ২৩ জুলাই রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৫ সালে কামরুল হাসান সুজন জানান যে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে আবু হেনার মনোনয়ন নিশ্চিত। ২০০৮ সালে বিএনপি মনোনয়ন না দেওয়ায় এটা (আওয়ামী লীগের মনোনয়ন) সুখবর বলে মনে করেন আবু হেনাকে। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টার একটি পদ সৃষ্টির কথা শোনা যায়। কামরুল হাসান সুজন জানান যে, সুনামগঞ্জ থেকে একজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা আবু হেনাকে ওই পদের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর এপিএস পরিচয়ে জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তি ফোন করে এ ব্যাপারে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের আগ্রহের কথা আবু হেনাকে জানান। এ পদ পেতে আবু হেনা আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সেলিনা রহমান নামের একজন নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য পরিচয় দিয়ে আবু হেনার সঙ্গে কথা বলেন। তার সঙ্গে মোবাইলে বহুবার কথা হয় আবু হেনার। সেলিনা রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রী আবু হেনাকে দেখা করতে বলেছেন। সাক্ষাতের প্রস্ততি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর জন্য কয়েকটি দামি শাড়ি কেনা হবে এবং সাক্ষাতের দিন শাড়িগুলো আবু হেনার হাত দিয়ে দেওয়া হবে। তার কথার ওপর বিশ্বাস করে কামরুল হাসান সুজনকে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা দেন আবু হেনা। সব চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য আরো ১৩ লাখ টাকার উপহার প্রয়োজন বলে জানান কামরুল হাসান সুজন। ৯ জুলাই ওই টাকাও দেওয়া হয় কামরুল হাসান সুজনকে। পরের দিন কামরুল হাসান সুজন জানান যে, সেলিনা রহমান অসন্তুষ্ট। তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য ১৬ জুলাই কামরুল হাসান সুজনের হাতে আরো ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল পরিচয়ে ফোন করে একজন ‘হেনা আঙ্কেল’ সম্বোধন করে জানান যে, তার এক বান্ধবীকে স্বর্ণালংকার উপহার দিতে ১০ লাখ টাকা লাগবে। পরের দিন জাহাঙ্গীরকে এ কথা জানানোর পর তিনি জানান, সকাল ৯টার মধ্যে ১০ লাখ টাকা লাগবে। তাদের কথায় সন্দেহ হলে টাকা দেওয়ার কথা বলে ২২ জুলাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় কামরুল হাসান সুজনকে আটক করা হয়। এভাবে তিনজন প্রতারক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সম্মানহানির জন্য মোট ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।