ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,২৬ জুলাই : জেএমবির সারোয়ার তামিম গ্রুপের সদস্যরা আরবী ভাষায় অনুবাদ করতে ও ইন্টারনেট ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস ডাউনলোড করতে বেশ দক্ষ। অধিকাংশ জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে এমন সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বাড্ডায় গ্রেপ্তার হওয়া জেএমবির সারোয়ার তামিম গ্রুপের তিন সদস্যারা সংগঠনের পক্ষে কর্মী সংগ্রহ, অর্থ সংগ্রহ, জিহাদে উদ্ধুদ্ধকরণ ও হিজরতের পূর্ব প্রস্তুতি মূলক পর্বসমুহ সম্পন্ন করার দ্বায়িত্বে নিয়োজিত ছিল।
আজ বুধবার দুপুর দেড়টার কাওরয়ানবাজার র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখায় র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন , গ্রেপ্তারকৃতরা ইমাম মেহেদী নামে একজন বড় ভাইয়ের তত্ত্ববধানে জেএমবির সারোয়ার তামিম গ্রুপটি পূনর্গঠনের কাজে নিয়োজিত ছিল।
বুধবার সকালে রাজধানীর বাড্ডার আফতাবনগর এলাকা থেকে গোপন বৈঠকের সময়ে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মুশফিকুল হক (২৪), বিপ্লব হোসেন ওরফে সুন্নাহ কামাল (২৬) ও মামুনুর রশিদ ওরফে আবু ইউশা (২৬)। র্যাবের দাবি এরা সবাই সারোয়ার তামিম গ্রুপের সদস্য।
লে.কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, গত ১০ এপ্রিল র্যাবের একটি দল মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের একটি বাড়িতে আভিযান চালিয়ে ফাতেমা আক্তার রুমা (২০) এবং উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাইদুল হক জিহান (২৪) নামে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের দুইজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তখন থেকেই এ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত ছিল।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মুশফিকুল হক ২০১২ সাল থেকে রিটার্ন টু ইসলাম নামক একটি সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল। সংগঠনটি উগ্র মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ। এই সংগঠনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক মামুনুর রশিদ ওরফে কাজল প্রথমে তাকে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের আদর্শে অনুপ্রাণিত করে। কাজল গত ছয় সাত মাস আগে সিলেট থেকে নিখোঁজ হয়।
র্যাবের দাবি পরবর্তীতে মুশফিকুল মহাখালীতে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য ঢাকায় আসলে তাকে মহাখালী কেন্দ্রিক সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সক্রিয় সদস্য হিসাবে প্রথমে অনুবাদক হিসেবে নিয়োজিত করা হয়।
মুশফিকুল জানায়, সাজিদ হাসান, তৌহিদ, গ্রেপ্তার হওয়া জাইদুল হক জিহান এবং ২০১৬ সালে গাজীপুরে জঙ্গি অভিযানে নিহত অপুসহ কয়েকজন মিলে তারা ঢাকার ফার্মগেটের একটি বাসায় নিয়মিত জঙ্গিবাদের গোপন মিটিং এ মিলিত হতেন।
মুশফিকুল মোবাইলে বিভিন্ন সাংকেতিক বার্তা সংশ্লিষ্ট অ্যাপসের মাধ্যমে জঙ্গি সংশ্লিষ্ট বার্তা আদান প্রদান, জঙ্গি সংশ্লিষ্ট ভিডিও, বিভিন্ন আর্টিকেলের পিডিএফ কপি এবং জঙ্গি সংশ্লিষ্ট ফান্ডের অর্থায়নে সরাসরি জড়িত ছিলেন। সে সর্বদাই বিভিন্ন সাংকেতিক বার্তার মাধ্যমে অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে জঙ্গি সংগঠনের অর্থায়নসহ সংগঠকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। এ পর্যন্ত তার ভাষ্যমতে সে এক লাখ টাকার বেশি জঙ্গি খাতে অর্থায়ন করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত মামুনুর রশিদ ওরফে আবু ইউশা জানায়, সে ইমাম মেহেদী এবং তাওহিদের মাধ্যমে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য হিসাবে জঙ্গিবাদী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে। আরবী ভাষায় দক্ষতা থাকায় সে সাংকেতিক বার্তা সংশ্লিষ্ট আ্যাপসের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জঙ্গি সংশ্লিষ্ট আর্টিকেল সংগ্রহ করে অনুবাদের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করার কাজে নিয়োজিত ছিল। এছাড়াও জঙ্গি সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহারের জন্য সে ইমাম মেহেদীকে বেশকিছু ভূয়া সীম দেয় এবং ইন্টারনেট থেকে জঙ্গি সংশ্লিষ্ট ভিডিও সংগ্রহ ও সরবরাহ করত।