ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,২৪ জুলাই : অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, র্যাব বাহিনীর প্রতি দেশের জনগণের যে আস্থা ছিল তা প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ। রবিবার নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আনা যুক্তি উপস্থাপনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, জনমনে স্থায়ী অনাস্থার সৃষ্টি করেছেন সাত খুনের নেপথ্যে থাকা তারেক সাঈদ। তারেক সাঈদ ও মেজর আরিফ খুনের সময় উপস্থিত না থাকলেও সাত খুনের নেপথ্যে ছিলেন।
আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, দেশের জনগণের আস্থা ও ভরসার স্থল ছিল র্যাব। গ্রামে কোনো অপরাধ সংগঠিত হলে বলা হতো দাঁড়া র্যাবকে খবর দিচ্ছি। জনগণের এই ভরসার স্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন তারেক সাঈদ।
অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম বলেন, তারেক সাঈদ নিজেই বলেছেন আমি অর্ডার দিয়েছি তাদের টলার ঘাটে যাওয়ার জন্য। ঘাটে যাওয়ার পর সিপাহিদের কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়। হত্যার অপর আসামি নূর হোসেন সেনা কর্মকর্তার কাছে ফোন করে বলল- ‘স্যার মেরে ফেলেছি’। ভিকটিমরা আগেই নূর হোসেনকে সন্দেহ করেছিলেন।
আদালতে প্রশ্ন তুলে অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, খুন করে ফেলেছি, একজন সেনা অফিসারের কাছে ফোন করে বলার সাহস পেল কী করে?
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের এই হত্যায় নাটের গুরু নূর হেসেন। মামলার সব আসামি খালাস পেলেও যেন নূর হোসেনের সর্বোচ্চ সাজা হয়। রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা বলেন, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের এ মামলায় নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছেন সেটাই সঠিক এবং তা যেন বহাল থাকে। র্যাব, সেনা এবং মন্ত্রী-এমপি যে-ই হোক অপরাধ করে যেন কেউই পার না পায়।
এর আগে রবিবার বেলা ৪টা ২০ মিনিটের দিকে রাষ্ট্রপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে। সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক খণ্ডন করে রিপ্লাই দেবে আসামিপক্ষ। তারপর মামলার কার্যক্রম শেষ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
রবিবার বিচারপতি ভবানী প্রসাদসিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। যুক্তিতর্ক শেষে অ্যাটর্নি জেনারেলের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলা এবং ডেথ রেফারেন্সের শুনানি বেশ কিছুদিন আগেই শুরু হয়েছে। আজকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমি আমার সমাপনী বক্তব্য শেষ করেছি। আমার বক্তব্যে বলেছি, এটি একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য যুক্ত থাকায় জনমনে বিষণ্ণতা দেখা দিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য এবং সাজা বহাল রাখার জন্য এই মামলায় নিম্ন আদালতে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হয়েছে এবং এই শাস্তি বহাল থাকা উচিত মর্মে আমি বক্তব্য রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, এ সাজা বহাল থাকার জন্যই আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমাদের বক্তব্য শেষ হয়েছে। এখন আসামি পক্ষের যদি প্রতিউত্তর দেয়ার থাকে তা তারা দেবেন। শিগগিরই মামলার শুনানি শেষ হয়ে যাবে বলে আমি আশা করি।