ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,০৫ জুন : সূর্যাস্তের পর পানাহারের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করাকে ইফতার বলে। ইফতার করা সুন্নত। রোজাদার নিজেও ইফতার করবে এবং সম্ভব হলে অন্যকেও এতে শরিক করাবে। এতে বিশেষ বরকত ও সওয়াব রয়েছে। আর ইফতারের সময় এ দোয়া পড়া উত্তম ‘আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমিন।’
সারা দিন রোজা রেখে শরীর আসরের পর থেকে নেতিয়ে যায়। এ অস্বস্তিকর সময়ে ইফতারের বিধান আল্লাহর পক্ষ থেকে রোজাদারের জন্য নিয়ামতস্বরূপ। সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে। খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। পানি হলো অধিক পবিত্র।’ (আবু দাউদ)।
রসুলে করিম (সা.) বলেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে। ইফতারের সময় (যখন রোজাদাররা ইফতারি-সামগ্রী নিয়ে দোয়া-দরুদ পড়তে পড়তে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করে) এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। (বুখারি ও মুসলিম)।
সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করতে হবে। রসুল (সা.) বলেছেন, লোকেরা ততক্ষণ কল্যাণের মধ্যে থাকবে যতক্ষণ তারা ইফতার জলদি করবে। (বুখারি ও মুসলিম)।
হাদিসে কুদসিতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় সেই বান্দা, যে ইফতার সঠিক সময়ে করে।’ (তিরমিজি)।
এ হাদিসগুলো প্রমাণ করে, ইফতারের নির্দিষ্ট সময় থেকে দেরি করা মোটেই উচিত নয়। যদি কেউ ইচ্ছা করে ইফতারে দেরি করে তাহলে সে রসুলুল্লাহ (সা.) এর নির্দেশ অনুযায়ী কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে এবং আল্লাহর কাছে অপ্রিয় হবে। সুতরাং এ ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।
ইফতার করা যেমন স্বতন্ত্র ইবাদত, তেমনি অন্য রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলতও অনেক। রসুলে মকবুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার জন্য গুনা মাফ এবং দোজখের অগ্নি থেকে নাজাতের অসিলা হবে এবং ওই রোজাদারের সমান সওয়াব সেও লাভ করবে। অথচ ওই রোজাদারের (যিনি ইফতার করেছেন) সওয়াবের বিন্দু পরিমাণও কম হবে না।
সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল (সা.)! আমাদের মধ্যে অনেকের এই সামর্থ্য নেই যে অন্যকে ইফতার করাবে, অর্থাৎ পেট ভরে খাওয়াবে। নবী করিম (সা.) বললেন, পেট ভরে খাওয়ানো জরুরি নয়, বরং যে কোনো রোজাদারকে একটি খেজুর বা এক ঢোক পানি অথবা সামান্য দুধ দিয়ে ইফতার করাবে, তাকেও উপরোক্ত সওয়াব প্রদান করা হবে। (মিশকাতুল মাসাবিহ)।
রোজাদারকে ইফতার করালে তার প্রতিদান আল্লাহ নিজের পক্ষ থেকে প্রদান করেন, রোজাদারের পক্ষ থেকে নয়। এটা আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের আলামত। আল্লাহ আমাদের সঠিক সময়ে ইফতার ও অন্যকে ইফতার করিয়ে রমজানের পূর্ণ সওয়াব হাসিল করার তৌফিক দান করুন। আমিন। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।