পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে বোমা হামলার ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য।
বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, চাঁন মিয়া, ওমর ফারুক ওরফে মানিক, মোঃ শাহ জালাল, হাফেজ ক্বারী আহসান উল্লাহ মাহমুদ, কবির হোসেন ওরফে রাসেদ।
এদের মধ্যে কবির হোসেন হোসনির দালানের ঘটনায় সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। কবির জেএমবির আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য। সেসময় শাহাদাত নামে আরেকজন উপস্থিত ছিলেন। তবে বুধবার রাতে ডিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিনি নিহত হোন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, হোসেনি দালানের ঘটনায় ৫ জন্য অংশ নেয়। এদের মধ্যে নিহত শাহাদাত পরিকল্পনাকারী ছিলেন।
আসামিদের বরাত দিয়ে ডিবির প্রধান জানান, ওদের পরিকল্পনা ছিল মোহাম্মদপুরের বিহারী ক্যাম্পের শিয়াদের উপর হামলা চালিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। এজন্য তারা মোহাম্মদপুরে বাড়ি ভাড়া নেয়। তবে তারা জানতে পারে যে শিয়া সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় মিলনাস্থল হোসেনি দালান। তাই তারা স্থান পরিবর্তন করে সেখানে নাশকতার পরিকল্পনা করে। সেদিন হোসেনি দালানের কবরস্থানের ভেতর থেকে ৫ টি গ্রেনেড ছোড়া হয়।
আসামিদের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা হোসেনি দালানের পুরো ঘটনাটি ভিডিও করতে চেয়েছিল। তবে আলোর স্বল্পতার কারণে করেনি।
এঘটনার সঙ্গে গাবতলীর এএসআই ইব্রাহীম হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র আছে দাবি করে মনিরুল ইসলাম বলেন, হোসেনি দালানে বোমা হামলার মহড়া শেষে আসামিরা গাজীপুরের শালবন থেকে ঢাকায় ফিরছিল। তখন তল্লাশি চালানোর সময় এএসআই ইব্রাহীমকে হত্যা করা হয়।
মনিরুল ইসলাম জানান, আশুলিয়ায় শিল্প পুলিশের কনস্টেবল মুকুল হোসেনকেও হত্যা করে শাহাদাত। সেসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিল, হত্যার পর হত্যাকারীদের একজন তাদের কাছে পানি পান করতে চাই। তার দুহাতে ঘাঁ ছিল। নিহত শাহাদাতেরও দু’হাতে সেই ঘাঁয়ের চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ। আশুলিয়ার ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায়ও শাহাদাত ছিল।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সাবেক চেয়ারম্যান খিজির খানের গলায় চাকু চালিয়েছিল শাহাদাত। পুলিশের ভাষ্যমতে, এটি ছিল গেরিলা চাকু। অস্ত্র ক্রয়ের জন্যই তারা খিজির খানকে হত্যা করেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামিরা আন্তর্জাতিক সংগঠনের নাম জড়িয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছিল।