ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি,০৩ জুন : ইফতার মাহফিল ভণ্ডুল করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী মসজিদে ঢুকে হামলা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এর জের ধরে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত ২০জন। এদের বেশিরভাগই বিএনপিকর্মী ও মসজিদের মুসল্লি।
এ অবস্থায় ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান উপস্থিত হলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েন।এতে পণ্ড হয়ে যায় ইফতার মাহফিল। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।
জানা গেছে, কেরানীগঞ্জে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমানের হযরতপুরের বাড়ির পাশের মসজিদে শুক্রবার ইউনিয়ন বিএনপি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। মসজিদটি আমান নিজে নির্মাণ করেছেন। এতে প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল আমান উল্লাহ আমানের। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ইফতারের জন্য মসজিদের পাশে রান্নাবান্নাসহ আয়োজন চলছিল।
ঘটনাস্থলে বিএনপির নেতাকর্মীসহ সাধারণ মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ক্ষমতাসীন দলের শতাধিক নেতাকর্মী হঠাৎ লাঠিসোটা নিয়ে মসজিদের ভেতর ঢুকে উপস্থিত লোকজনকে মারধর করে এবং খাবার ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে তারা চলে গেলে বিএনপির লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে আসলে কয়েক দফা উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমান উল্লাহ আমান বলেন, ’মসজিদের ভেতর শান্তিপূর্ণভাবে ইফতার পার্টি চলছিল। এখানেও তাদের হামলা! আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই প্রথম দফা হামলার খবর পাই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার আয়নালের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। এরপর আমি স্থানীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছিল। নতুন করে আর কোনো ঝামেলা হবে না। এরপর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে মসজিদের ভেতর অবস্থান নেই। কিছুক্ষণ পর আয়নালের নেতৃত্বে পুনরায় হামলা চালানো হয়। মসজিদের দরজা জানালাগুলো ভাংচুর করেছে। আমাকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে। এরপর আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করি।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, হামলার সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয়ে হযরতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আয়নাল বলেন, মসজিদের ভেতর জঙ্গি পাওয়া গেছে এমন খবর পেয়ে আমার লোকজন সেখানে জড়ো হলে একটু ঝামেলা হয়।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যোবায়ের বলেন, ইফতারের জন্য পুলিশের অনুমোদন নেয়া হয়নি। শুনেছি, মসজিদের ভেতর ইফতারের নামে বিএনপি কমিটি গঠন করছিল। কমিটি নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে মারামারি হয়। এসময় হৈচৈ শুনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে গেলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা।
এক পর্যায়ে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান ওসি।
সৌজন্যে : দৈনিক যুগান্তর