ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস ও এর আশপাশের কয়েকটি স্থানে সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ১৫৩ জন নিহত হওয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলসহ বিশ্বনেতারা। এসব হামলায় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে এ হামলাগুলো হয়। এ হামলার পর ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়া ওঁলাদ। দেশটির সকল সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ হামলার সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ নিজেই স্টেড ডি ফ্রান্স স্টেডিয়ামে বসে ফ্রান্স-জার্মানির মধ্যকার আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ দেখছিলেন। এ সময় স্টেডিয়ামের কাছাকাছি এলাকায় দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ঘটনার পর দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন প্রেসিডেন্ট। তৎক্ষণাৎ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
এদিকে দেশের সাধারণ নাগরিকদের ঘরে অবস্থান করার জন্য বলেছে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বাড়তি নিরাপত্তার জন্য নগরজুড়ে সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। প্যারিস সিটি হলের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শহরের মাঝামাঝি বাটাক্লঁ কনসার্ট হলেই অন্তত ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মার্কিন ব্যান্ড দল ইগলস অব ডেথ মেটালের কনসার্ট দেখতে ওই হলে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। এরই মধ্যে অন্তত ৩ হামলাকারী হলে ঢুকে কালাশনিকভের মতো দেখতে রাইফেল নিয়ে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান।
এ হামলার নিন্দা জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, এটা জঘন্য ও বর্বর হামলা। তিনি সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্সের পাশে আছে বলে জানান। হোয়াইট হাউসে ওবামা সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নিরপরাধ বেসামরিক লোকজনকে ভীতসন্ত্রস্ত করার জন্য আরেকটি জঘন্য চেষ্টা আমরা ফ্রান্সে দেখলাম। ফ্রান্সের সরকার ও জনগণের যেকোনো প্রয়োজনে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা এসব সন্ত্রাসীকে বিচারের সম্মুখীন করতে এবং যেকোনো সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ককে শায়েস্তা করার জন্য প্রস্তুত।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, ফ্রান্সে হামলায় আমি হতভম্ব ও ব্যথিত। আমরা ফ্রান্সের মানুষের পাশে আছি। তাদের সাহায্যে যতটা সম্ভব, আমরা তা করব। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিবর্গ, তাদের পরিবার ও প্যারিসের সব জনগণের জন্য আমার সহমর্মিতা রইল। জার্মানি তাদের যে কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার জন্য প্রস্তুত আছে।