ডুবে যাওয়া কয়লাবাহী কার্গোতে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিজস্ব বিডি ডট কম,বরিশাল প্রতিনিধি,২৫ এপ্রিল :  বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে এমভি গ্রীন লাইন-২ লঞ্চের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে কার্গোডুবির ঘটনা নিয়ে নতুন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদীর পানিতে কয়লা মিশে পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে জাহাজ উদ্ধার কিংবা কয়লা অপসারণ করা সম্ভব না হলে এ শঙ্কা বেড়ে যাবে কয়েক গুণ।

পরিবেশবাদীদের সংগঠন বেলার বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ক লিংকন বায়েন বলেন, কয়লায় সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইডসহ নানাবিধ দূষণ পদার্থ থাকে। যা পানিতে মিশে পানির স্বাভাবিক গুণাগুণ নষ্ট করে। এতে করে জলজ প্রাণী পানিতে বসবাসের ক্ষেত্রে হুমকির মুখে পড়তে পারে। অনেক সময় মাছও মারা যেতে পারে। এজন্য কয়লা পরিবহন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, নদী, খাল, জলাশয় সবকিছুই রাষ্ট্রের জনগণের। এগুলো রক্ষায় সরকারি দপ্তরগুলো ভূমিকা পালন করে থাকে। তাদেরই উচিত কয়লার বিষয়টি নিয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এইচ এম রাশেদ জানান, কয়লা জীববৈচিত্রের জন্য ক্ষতিকারক, তবে পুরো নৌ-দূর্ঘটনার বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রতিবেদন পেলেই কয়লার বিষয়টি পরিস্কারভাবে বোঝা যাবে। সে অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামান বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও নানা জটিলতার জাহাজ উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে কার্গোর ওপর ত্রিপল দিয়ে ঢাকা থাকার বিষয়টি জানা গেছে বলে জানিয়ে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তার ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা জানান, রোববার সকালে বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক চলে আসার পর এখন পর্যন্ত গ্রীন লাইন-২ লঞ্চটি ও ডুবে যাওয়া কার্গোটি উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

অবশ্য উভয় জাহাজের মালিক পক্ষকে তাদের জাহাজ তোলার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি কয়লা আমদানিকারক ও কার্গো মালিককে অল্প সময়ের মধ্যে কয়লার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ডুবে যাওয়া কার্গোটির দুই প্রান্ত চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। যাতে অন্যান্য নৌ-যান নিরাপদে চলাচল করতে পারে। তবে এসব কয়লা পরিশোধিত না অপরিশোধিত সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বিকেলে কীর্তনখোলা নদীতে কয়লাবাহী কার্গোর সাথে যাত্রীবাহী দিবা সার্ভিস এমভি গ্রীন লাইন-২ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এসময় ৫২৫ টন কয়লা নিয়ে কার্গোটি ঘটনাস্থলেই ডুবে যায়। অপরদিকে গ্রীন লাইন-২ লঞ্চটির সামনের অংশের তলা ফেটে পানি উঠে অর্ধনিমজ্জিত হয়।