নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর সারাদেশে অনুষ্ঠিত হবে পৌর নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও বিরাজ করছে ভোটের আমেজ। চট্টগ্রামের ১০ পৌর সভায় নেতা-কর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে বাড়তি তৎপরতা। এছাড়া নির্বাচনের জন্য সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে জেলা নির্বাচন অফিস।
চট্টগ্রামের স্বদ্বীপ, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, মীরসরাই, পটিয়া, রাউজান, বারইয়ারহাট, রাংগুনিয়া ও সীতাকুণ্ড পৌর সভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মামলা সংক্রান্ত জটিলতা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়ায় হাটহাজারী ও ফটিকছড়িতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। চট্টগ্রাম জেলার রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন জানান, নির্বাচনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা।
কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার), দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৩ ডিসেম্বর (রোববার)। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর।
তফসিল ঘোষণার পর থেকে শুরু হয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের তৎপরতা। দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে প্রার্থীরা। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে প্রত্যেক পৌর সভায় একাধিক প্রার্থীর তৎপরতা লক্ষণীয়। অন্যদিকে বিএনপি পৌর নির্বাচনে অংশ নেবে কী না -তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ভিতরে ভিতরে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। দলীয় হাই কমান্ড থেকে গ্রীন সিগন্যাল পেলেই নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়বেন তারা।
চট্টগ্রামের যেসব পৌর সভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র রাউজানে বর্তমান মেয়র বিএনপি সমর্থিত। বাকি ৯ পৌর সভাতে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের মেয়র। গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন মামলার কারণে কোনো কাজই সফলভাবে করতে পারেননি মেয়র আবদুল্লাহ আল হাসান। ফলে এবার সরকারি দল চায় রাউজানসহ সবকটি পৌর সভা তাদের দখলে নিতে। অন্যদিকে সরকারের নানা নেতিবাচক দিককে কাজে লাগিয়ে এসব পৌর সভা পুনরুদ্ধার করতে চায় বিএনপি।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে এখনো কোনো প্রকার নির্দেশনা আসেনি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পাওয়ার পর কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক উপজেলায় দল থেকে একক প্রার্থী দেয়া হবে। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ যদি প্রার্থী হয় তাহলে তার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল হাসান বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ছাড়া এখনো নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অব্যাহত রেখেছে সরকার। এ অবস্থায় নির্বাচনী মাঠে কাজ করার মত পরিবেশ নেই।
তিনি আরো বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত হলেই নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। চট্টগ্রামের ৬টি পৌর নির্বাচনে অংশ নেবে। সিদ্ধান্ত হলে অবশ্যই একক প্রার্থী দেয়া হবে প্রত্যেক পৌর সভায়।
এ ছাড়া নির্বাচনের আগে সরকারকে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে বলেও জানান বিএনপির এ নেতা।