ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,হোমনা প্রতিনিধি,২৩ জানুয়ারি : কুমিল্লার তিতাসে হাওয়া বেগম (৩০) নামে যৌতুকের বলি এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে তিতাস থানা পুলিশ। গতকাল রবিবার স›ন্ধ্যায় উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের রাস্তা থেকে ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। নিহত গৃহবধু ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসী আমীর হোসেনের স্ত্রী এবং দাউদকান্দি উপজেলার সুন্দুলপুর ইউনিয়নের চমকখোলা গ্রামের মৃত মোর্শেদ মিয়ার মেয়ে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একই গ্রামের সুনো মিয়ার পুত্র সাঈদকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও নিহত গৃহবধুর স্বজনরা জানান, জিয়ারকান্দি গ্রামের মৃত গোলাম আলীর ছেলে প্রবাসী আমির হোসেনের স্ত্রী হাওয়া বেগমকে বিয়ের সময় দের লাখ টাকা যৌতুক দিয়ে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর স্বামী বিদেশ চলে যায়। পরে শ্বাশুড়ী বানু বেগম, ননদ রুবী আক্তার এবং ভাসুরের ছেলে শামীম যৌতুকের জন্য প্রায় নির্যাতন করত। পরে স্বামী প্রবাসে থাকায় নিহতের পিতা মেয়ের সুখের কথা ভেবে দালান নির্মাণের জন্য আট লাখ টাকা দেয়। সেই টাকায় দালান নির্মাণ করলেও থাকতে পারতো না গৃহবধু হাওয়া। উল্টো দালানের আসবাব পত্রের জন্য চাপ দেয়া হতো এবং পুনরায় টাকা আনতে রাজি না হওয়ায় চলতো অমানুষিক নির্যাতন। সবশেষ গতকালও পৈষাচিক নির্যাতন করে মেরে হাওয়া বেগমের লাশ দালানের পাশে রাস্তায় ফেলে বাড়ি তালা দিয়ে পরিবারের সবাই পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
গৃহবধূর মা পরশী বেগম মেয়ের হত্যার খবর পেয়ে বার বার মূর্ছা যান। তারপরও কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, মেয়ের সুখের জন্য বিয়ের সময় দের লাখ টাকা জামাইকে দিয়ে বিদেশ পাঠাই। বাড়িতে দালান নির্মাণ করার সময় জামাইর দেওয়া রোজগারের টাকাসহ আমরা আরোও আট লাখ টাকা দিয়ে দালান করে দেই। আর সেই দালানের মধ্যে আমার মেয়েকে থাকতে না দিয়ে অনেক নির্যাতন করত। আবার দালান সাজানোর জন্য ফার্ণিচারের টাকার লাইগা নির্যাতন করে আমার মেয়েকে দিন দুপুরে মেরে ফেলেছে। আমি এ জল্লাদগো বিচার চাই।
তিতাস থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিররুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। লাশের ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। ওই পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। তবে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।