ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),মাদারীপুরের রাজৈর প্রতিনিধি, সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫ || বৈশাখ ১ ১৪৩২ :
মাদারীপুরের রাজৈরে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
Advertisement
এসময় ১০-১২টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ অর্ধশত আহত হয়েছেন।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রোববার (১৩ এপ্রিল) রাত ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দফায় দফায় রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজৈর গ্রামের ফুচকা ব্রিজের কাছে ২ এপ্রিল আতশবাজি ফোটায় বদরপাশা গ্রামের আতিয়ার আকনের ছেলে জুনায়েদ আকন ও তার বন্ধুরা। এসময় ওই গ্রামের মোয়াজ্জেম খানের ছেলে জোবায়ের খান ও তার বন্ধুরা মিলে তাদের বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এর জেরে ঘটনার পরের দিন ৩ এপ্রিল সকালে রাজৈরের বেপারিপাড়া মোড়ে জোবায়েরকে একা পেয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেয় জুনায়েদ ও তার লোকজন। পরে আহত জোবায়েরের বড় ভাই অনিক খান বাদী হয়ে জুনায়েদ আকনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় একটি মামলা করেন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় অনিক খান রাজৈর বাজারে গেলে ধাওয়া দেয় জুনায়েদ ও তার বন্ধুরা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ৯টার দিকে পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশা গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। এসময় কয়েকটি দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। খবর পেয়ে রাজৈর থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় রাজৈর থানার ওসি, পুলিশ কর্মকর্তাসহ উভয় পক্ষের ২৫ জন আহত হন।
এর জের ধরে রোববার (১৩ এপ্রিল) রাত ৭টার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে আবারো সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। এসময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এছাড়া দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। একপর্যায়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিস যৌথ চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
Advertisement
এ ঘটনায় মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের অর্ধশত লোকজন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রাজৈর গ্রামের মেহেদী মীর (২২), রাসেল শেখ (২৮), সাহাপাড়া গ্রামের মনোতোষ সাহা (৫০), আলমদস্তার গ্রামের তাওফিককে (৩৭) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের পায়ে আঘাত পাওয়ায় তিনি মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এরপর রাত সারে ১২টার দিকে উত্তেজিত গ্রামবাসী পুলিশের দুটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। রাজৈর বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। এসময় রাজৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা ও চালক শাহাবুদ্দিন আহত হন।
Advertisement
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এসময় এসআই মোস্তফা ও চালক শাহাবুদ্দিনের মাথা ফাটিয়েছে হামলাকারীরা। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।