ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আইন আদালত প্রতিনিধি,শনিবার ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ || মাঘ ১৯ ১৪৩১ :
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের পর এবার গুলশান-বাড্ডায় বেপরোয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। চাঁদা না পেয়ে প্রকাশ্যে গুলি, মারধর করে টাকা লুট, এমনকি যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এমন ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয়রা।
Advertisement
গুলশানের ২৯ নম্বর সড়কের একটি বাসায় গত ১১ জানুয়ারি রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে যৌথবাহিনী সেজে অভিযানে যান ৭ থেকে ৮ জন। ২৫ মিনিটে বাসার সব কিছু লুট করে পালিয়ে যান তারা।
পরে থানায় এক সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে ৬০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ৪০ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। ডাকাতির বিষয়ে জানতে সেই বাসায় গেলে গণমাধ্যমের সঙ্গে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
এ ছাড়া ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের ডিসিসি মার্কেটের পাশেই প্রধান সড়ক দিয়ে শ্যালককে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী। এ সময় তার গতিরোধ করেন ১৫ থেকে ২০ জন। লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে প্রায় কোটি টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান তারা। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, সন্ত্রাসী ইয়াসিন ও তার সহযোগীরা ঘটিয়েছেন এ ঘটনা।
Advertisement
শুধু তাই নয়, ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে মধ্য বাড্ডার চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় ৪টি মোটরসাইকেলে ১০ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী এসে জাতীয়তাবাদী চালক দলের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খন্দকারকে পায়ে গুলি করেন। পরে ফাঁকা গুলি করতে করতে পালিয়ে যান সন্ত্রাসীরা।
জুয়েল জানান, একটি সমিতির টাকা বিতরণ চলছিল। এ সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী রবিন মাহবুব পরচিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ১০ মিনিট পর লোক পাঠিয়ে গুলি করা হয় তাকে। প্রথমে মামলা করলেও পরে ভয়ে মামলা তুলে নেন জুয়েল।
একের পর এক ডাকাতি ও গুলির ঘটনায় আতঙ্কে এলাকাবাসী। গুলশানের মতো জায়গায় এমন ঘটনা প্রত্যাশা করেন না তারা।
স্থানীয়রা বলেন,
মানসিকভাবে আমরা ভেঙে পড়েছি। ঘর থেকে বের হওয়াই যেন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। গুলশানের মতো জায়গায় এমন ঘটনা দুঃখজনক।
গুলশানের দুটি দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার করলেও তেমন কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সময় সংবাদকে বলেন, ‘গুলশান, বারিধারা কূটনেকি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এখানে আমাদের নিয়মিত পুলিশি তৎপরতার বাইরেও একটু বেশি তৎপরতা থাকে। অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা আইনের আওতায় আসবে।’
Advertisement
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ার নিরাপত্তা দেশের ভাবমূর্তি বহন করে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের পাশাপাশি নিরাপত্তা আরও জোরদারের তাগিদ তাদের।
সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন,
যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। আর সেই ব্যবস্থাটি বাস্তবায়ন করে সাধারণ মানুষের মনে নিরাপত্তা নিয়ে যে সংকট বা সংশয় আছে, সেটি দূর করার চেষ্টা করতে হবে।
শুধু কাগজে চেকপোস্ট টহলের তথ্য না দিয়ে মাঠেও কার্যকর ভূমিকা রাখার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
গুলশান-বাড্ডায় ঘটছে ডাকাতিসহ নানা অপরাধের ঘটনা। ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া