লাল, কালো, সাদার মন্ত্রে এবারের অমর একুশে বইমেলা

SHARE

বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাওয়া অমর একুশে বইমেলার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বাংলা একাডেমি প্রতিনিধি,শুক্রবার   ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ১৭ ১৪৩১ :

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ’ প্রতিপাদ্যে মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের স্মরণে আগামী শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) শুরু যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা-২০২৫। এবার মেলার রঙ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে লাল, কালো ও সাদা। বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে লাল, শোকের প্রতীক হিসেবে কালো এবং আশার প্রদীপ হিসেবে চিরকালীন সাদা রঙকে রাখা হয়েছে।

Advertisement

 

বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) অমর একুশে বইমেলার আয়োজনের ওপর সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন, ‘অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটি’ এর সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন।

অমর একুশে বইমেলা ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার বেলা ৩টায় উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

 

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। সুতরাং অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারের অমর একুশে বইমেলার প্রেক্ষাপটটাও ভিন্ন। এবারের অমর একুশে মেলায় গণঅভ্যুত্থানকে ফুটিয়ে তোলা হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বইমেলায় থাকছে ‘জুলাই চত্বর’। মেলায় বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হবে গণঅভ্যুত্থানকে।

 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না।

 

ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেরা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ছাড়া)। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

Advertisement

প্রকাশনা থাকছে ৭৮০টি
মেলা পরিচালনা কমিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের বইমেলায় মোট ৭৮০টি প্রকাশনা থাকবে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯ টি, মোট ইউনিট ১০৮৪ টি, গত বছর প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৪২ টি এবং ইউনিট ছিল ৯৪৬ টি। এবার মোট প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি , বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি। অবশ্য গত বছর প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ছিল ৩৭ টি। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায়। সেখানে প্রায় ১৩০ টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিশু চত্বরে মোট প্রতিষ্ঠান ৭৬ টি এবং ইউনিট ১২০টি, গত বছর ছিল ৬৮ টি এবং ইউনিট ১০৯টি।

বইমেলার আঙ্গিক ও স্টল বিন্যাস
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এবার বইমেলার বিন্যাস গতবারের মতো অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। তবে আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ করে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে গতবারের মেলার বের হওয়ার পথ এবার একটু সরিয়ে মন্দির গেটের কাছাকাছি নেওয়া হয়েছে। টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্ল্যান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট চারটি প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ রাখা হয়েছে।

 

খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সীমানা ঘেঁষে বিন্যস্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, খাবারের স্টলগুলোকে এবার বিশেষভাবে সুবিন্যাস্ত করা হয়েছে। নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা অব্যাহত থাকবে। শিশু চত্বর মন্দির গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে, যেন শিশুরা অবাধে বিচরণ করতে পারে এবং তাদের কাঙ্ক্ষিত বই সহজে সংগ্রহ করতে পারে।

বাংলা একাডেমি দেবে ২৫ শতাংছ কমিশন
অমর একুশে বইমেলায় এবার বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান শতকরা ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

বইমেলা হবে পলিথিনমুক্ত 
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এবার বিশেষ একটি দিক থাকছে অমর একুশে মেলায়। সেটি হলো: পুরো মেলা হবে পলিথিনমুক্ত। বইমেলার আয়োজনকে পরিবেশ সুরক্ষা ও সচেতন এবং জিরো ওয়েস্ট বইমেলায় পরিণত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বইমেলাকে পলিথিন মুক্ত রাখতে আয়োজনস্থল ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সব স্টল, দোকান, মঞ্চ, ব্যানার, লিফলেট, প্রচারপত্র, ফাস্টফুড, কফিশপ, খাবারের দোকান ইত্যাদি প্রস্তুতে সিঙ্গেল ইউজ প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার শতভাগ পরিহার করে পুনঃব্যবহারযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব উপকরণ, যেমন পাট, কাপড়, কাগজের মতো জিনিস ব্যবহার করতে বলেছে মেলা কর্তৃপক্ষ।

Advertisement