সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে নিয়োগ পাবেন ৬০০ জন (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজনীতি প্রতিনিধি,বুধবার   ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৪ ১৪৩১ :

রাজধানীতে সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য হিসেবে ৬০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। তারা প্রত্যেকে প্রতিদিন ৫৬০ টাকা করে পাবেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের একটি প্রস্তাবে শর্তসাপেক্ষে সায় দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে এ নিয়োগ দেওয়া হবে।

Advertisement

সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা করে ২ শিফটে কাজ করবেন। সে হিসেবে ২৪৫ দিনে মোট খরচ হবে ৮ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা।

এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে সিআইডির প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে প্রথম পর্যায়ে পুলিশ বাহিনীতে ১০০ জনকে চাকরি দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, “আমরা আপাতত পুলিশে শুরু করছি। পরবর্তীতে আমরা আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সব ডিপার্টমেন্টে এটা করে দেব। ট্রাফিকের একটা সমস্যা রয়ে গেছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আমরা ১ হাজার ছাত্রকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত ৪০০ শিক্ষার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”

২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬-এর ১০ ধারা অনুযায়ী সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের দৈনিক ভাতার হার পুনঃউপযোজন ও অর্থ ব্যয়ের অনুমতি দেওয়ার জন্য অর্থ বিভাগের বাজেট-১ শাখায় চিঠি দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে বাজেট শাখা ভাতার হার নির্ধারণের মতামতের জন্য প্রবিধি অনুবিভাগে চিঠিটি পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ নভেম্বর তারিখে প্রবিধি অনুবিভাগ থেকে সহায়ক ট্রাফিক পুলিশের দৈনিক ভাতার হার নির্ধারণ করে বাজেট শাখায় চিঠি পাঠানো হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন এলাকায় ৩৩৯টি পয়েন্টে ৪ হাজার ১১৫ জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। ৪ নভেম্বর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, শৃঙ্খলাজনিত কারণে অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের ব্যবহার করতে পারছে না ডিএমপি। তাই, ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬-এর ১০ ধারা অনুযায়ী ৬০০ জন সহায়ক পুলিশ সদস্যের ভাতা নির্ধারণের জন্য অনুরোধ করা হয়।

Advertisement

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবে সহায়ক পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ৬০০ জন। তারা প্রতিদিন পালাক্রমে ৪ ঘণ্টা করে কাজ করবেন। প্রথম পালা সকাল ৮টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় পালা বিকেল ৪টা রাত ৮টা পর্যন্ত। প্রতিজন ৪ ঘণ্টা কর্মকালের জন্য ভ্যাট-ট্যাক্সসহ প্রতিদিন পাবেন ৫৬০ টাকা করে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত মোট ২৪৫ দিন এই নিয়োগ বহাল থাকবে। এতে মোট খরচ হবে ৮ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের চিঠিটি অর্থ বিভাগ পরীক্ষা করেছে। এতে দেখা গেছে যে, সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের প্রস্তাবিত দৈনিক কর্মঘন্টা অনুযায়ী প্রতি পালা অর্থাৎ চার ঘণ্টা কর্মকালের জন্য ভ্যাট/ট্যাক্সসহ ৫৬০ টাকা হারে ভাতা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী সম্ভাব্য ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত সময় হিসেবে মোট ৮ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে বলে পুলিশ অধিদপ্তরের চিঠিতে জানানো হয়েছে। প্রস্তাবটি পর্যালোচনার পর সার্বিক বিবেচনায় অর্থ বিভাগ ৫৬০ টাকার স্থলে ৪৫০ টাকা হারে ভাতা নির্ধারণ করে সম্মতি জ্ঞাপন করলে পুনরায় প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় ৫৬০ টাকা হারে ভাতা নির্ধারণেরে জন্য অর্থ বিভাগে চিঠি পাঠায়।

পরে শর্তসাপেক্ষে অর্থ বিভাগ প্রশাসনিক বিভাগের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। শর্তগুলো হচ্ছে:

(১) শুধু জরুরি  ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহায়ক ট্রাফিক পুলিশের নিয়োজিতকরণ প্রযোজ্য হবে।
(২) সহায়ক ট্রাফিক পুলিশের জন্য বর্ণিত ভাতা তাদের কর্মে নিয়োজনের তারিখ থেকে কার্যকর হবে এবং ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
(৩) সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে এ নিয়োজিতকরণ সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে হবে।
(৮) সংস্থার নিজস্ব রিসোর্স সিলিংয়ের মধ্যে এ ব্যয় নির্বাহ করতে হবে এবং এ বাবদ অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি করা যাবে না।
(৫) এ ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে যাবতীয় আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
(৬) এ ব্যয়ে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
(৭) সহায়ক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট/মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ভাতা দিতে হবে।

প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে এসব বিষয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

 

সূত্র জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবটি সার্বিক অবস্থা বিবেচনার পর গত ৫ জানুয়ারি অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থ সচিব প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দিয়েছেন।

ফাইল ফটো