ঢাকা: একদিকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আন্দ্রে লিডসম সরে গেছেন, যার ফলে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রী পদে তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে পদত্যাগের সময়ক্ষণ জানিয়ে দিয়েছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। সব পথ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ায় আগামী বুধবারই (১৩ জুলাই) ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন থেরেসা মে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিট ও ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে সোমবার (১১ জুলাই) রাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।
এ খবর দেওয়ার আগে সংবাদমাধ্যম জানায়, ডেভিড ক্যামেরনের উত্তরসূরী হওয়ার দৌড় থেকে সবশেষ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সরে দাঁড়িয়েছেন আন্দ্রে লিডসম। লিডসমের সরে যাওয়ার খবর দেওয়ার পর রাতে জানানো হয়, ক্ষমতাসীন দলের প্রধান পদে থেরেসাকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। আর এরপরই খবর আসে, ক্যামেরন বুধবারই রানির কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করবেন। তারপর রানির সঙ্গে দেখা করে দায়িত্ব নিয়ে নেবেন থেরেসা।
৫৯ বছর বয়সী থেরেসা লৌহমানবী মার্গারেট থ্যাচারের পর দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করতে চলেছেন।
গত ২৩ জুন গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছেদের (ব্রেক্সিট) পক্ষে রায় যাওয়ার পরপরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন। সেই ঘোষণায় তিনি সেপ্টেম্বরে বিদায় নেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নতুন নেতা নির্বাচন দ্রুত হয়ে যাওয়ায় বুধবারই বিদায় নিচ্ছেন ক্যামেরন।
প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পেতে ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতায় লিডসম ছাড়াও ছিলেন কনজারভেটিভ পার্টির বরিস জনসন, মাইকেল গোভ, ইউকে ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টির (ইউকিপ) নেতা নাইজেল ফারাজের মতো নেতারা।
এদের মধ্যে লিডসম, জনসন, গোভ ও ফারাজরা ইইউবিরোধী। ইইউতে থাকার পক্ষের নেতা থেরেসা। পার্টির এমপিদের ভোটাভুটিতে সেই থেরেসাই এখন দায়িত্ব পাচ্ছেন ‘ব্রেক্সিট’ রচনা করা ব্রিটেনের।
এজন্য এখন প্রশ্ন উঠেছে, ইইউ ছাড়লে ব্রিটেন লাভবান হবে বলে যেসব ওয়াদা করা হয়েছিল, সেসব বাস্তবে না দেখা গেলে জবাবদিহি করবেন কে?
অবশ্য প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর থেরেসা একটি ‘উন্নততর যুক্তরাজ্য’ গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি ব্রেক্সিটের বিষয়টি সফলতার দিকে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
থেরেসা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এক সময় ব্রেক্সিটবিরোধী প্রচারণা চালালেও এখন আর ইইউতে যাওয়ার কোনো চিন্তা নেই। পেছনের দরোজা দিয়ে ইইউতে পুনরায় যোগ দেওয়ারও কোনো চেষ্টা হবে না। এমনকি দ্বিতীয় কোনো গণভোটেরও আয়োজন হবে না।
৫৯ বছর বয়সী থেরেসা মে ব্রেক্সিটবিরোধী প্রচারণা চালালেও অভিবাসী প্রশ্নে কঠোর বলে পরিচিত। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করা এ নারী ১৯৯৭ সাল থেকে পার্লামেন্ট সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করছেন। আর ৬ বছর ধরে অর্থাৎ ২০১০ সাল থেকে সামলাচ্ছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কট্টর ইসলামপন্থি বক্তাদের বিষয়ে কঠোর মনোভাবাপন্ন থেরেসা দীর্ঘদিন কাজ করেছেন সমলিঙ্গের বিয়ের পক্ষেও।