পূজার বন্ধে স্কুলছাত্রকে বেতনের জন্য আটকে রাখার অভিযোগে মামলা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),দিনাজপুর প্রতিনিধি,   বৃহস্পতিবার   ১৭ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ১ ১৪৩১:

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বেতনের টাকা আদায়ের জন্য ৫ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে পূজার বন্ধে আবাসিকে আটকে রাখার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

চিরিরবন্দর উপজেলার সুফফা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে এ ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সুফফা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিক হোসেন ঈসা (১২) ওই স্কুলের আবাসিক ছাত্র। ঈসা নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছি মকরামপুর পুর্বপাড়ার রাশেদ হোসেনের ছেলে। গত ৯ অক্টোবর দূর্গাপূজার ছুটি উপলক্ষ্যে ঈসার বাবা রাশেদ ছেলেকে নিতে আসেন। এসময় স্কুল কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতন বাবদ ১৬ হাজার টাকা পরিশোধের চাপ দেয়। রাশেদ বন্ধের পরে এসে টাকা দিতে চাইলে স্কুল কর্তৃপক্ষ টাকা ছাড়া ছেলেকে ছাড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। বাবা নিরুপায় হয়ে ছেলেকে রেখেই নওগাঁ চলে যান।

স্থানীয়রা জানান, ৫ দিন ওই ছাত্রটি ৬ তলা ভবনের নিচতলার বড় একটি কক্ষে তালাবদ্ধভাবে আটকে থাকে। ভবনের প্রতিবেশিদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তাৎক্ষণিক থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থলে এসে ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

আটক থাকা ছাত্র জানায়, স্কুল বন্ধের দিনে তার বাবা তাকে নিতে এসেছিল। স্যারেরা টাকার জন্য তাকে ছাড়েননি। তাই আব্বু টাকা আনতে গেছে।

Advertisement

ছাত্রের বাবা রাশেদ হোসেন জানান, তার ছেলেকে নিতে এসে ৬ ঘণ্টা বসিয়ে রেখে মিটিং করে জানিয়ে দেয়, অন্তত ১ মাসের টাকা নিয়ে এসে ছেলেকে নিয়ে যেতে হবে। এ পর্যন্ত ওই ছাত্র স্কুলে হেফাজতে থাকবে। পারিবারিক অনটনের কারণে টাকা ম্যানেজ করতে দেরী হয়েছে।

সুফফা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের পরিচালক এন্তাজ মুন্সী মুঠোফোনে জানান, ওই স্কুলছাত্রের বাবা তার ছেলেকে নিতে আসেনি। বাধ্য হয়েই তারা ছাত্রটিকে হেফাজতে রেখেছেন।

স্থানীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জন গোলাম রব্বানী জানান, স্কুলভবনের পাশেই তার বাসা। গত কয়েকদিন ধরে জানালা দিয়ে দেখতেছি একটি ছাত্র নিচতলার একটি কক্ষে আটকা। অনেক কষ্টে ওই ছাত্রের সাথে কথা বলি। সে পুরো ঘটনা জানালে, আমি সাংবাদিকদের খবর দেই। এটা অমানবিক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আজনবী সরকার জানায়, এটা অমানবিক। অভিযুক্ত ব্যাক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খান জানান, ছাত্রটিকে ১৩ অক্টোবর বিকেলে উদ্ধার করে তার বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় রাতে তার বাবা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুরো ঘটনা তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।