শোলাকিয়ায় ঈদগাহে বোমাহামলা, ২ পুলিশ ও হামলাকারী নিহত

SHARE

কিশোরগঞ্জ : শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের প্রবেশপথে জঙ্গিদের সঙ্গে গোলাগুলিতে দুই পুলিশ সদস্য ও এক হামলাকারী নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো ৭ পুলিশ সদস্য। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের গোলাগুলি চলছে। হামলার ‍কিছুক্ষণের মধ্যেই জঙ্গিরা পাশের আজিমুদ্দিন হাইস্কুলের পাশের একটি ভবনে আশ্রয় নেয়। এর চারদিক ঘেরাও করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সকাল সোয়া ৯টার দিকে দেশের সবচেয়ে বড় এ ঈদগাহের প্রবেশমুখে তল্লাশির সময় এ ঘটনার সূত্রপাত। গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারি রেস্টুরেন্টে হামলার ষষ্ঠ দিনে ঈদ জামাতে এ বর্বর হামলার ঘটনা ঘটলো।

নিহত পুলিশ সদস্যরা হলেন জহিরুল ইসলাম ও আনসারুল। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ-হামলাকারী সংঘর্ষে নিহত হয়েছে জঙ্গিদলের একজন। তবে নিহত জঙ্গির পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ।

এর মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল আনসারুল (৪০) বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএস) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার বাসিন্দা।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি মো. নূরে আলম বাংলামেইলকে জানান, শোলাকিয়ায় আহত সাত পুলিশ সদস্যকে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনসারুলের মৃত্যু হয়।

তিনি আরো জানান, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আহত ছয়জনের অবস্থা আরো খারাপ হলে তাদের হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

দুর্বৃত্তরা আকস্মিকভাবে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করতে পুলিশ পাল্টা গুলি ছুড়লে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে এক পুলিশ সদস্য নিহত হন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

এর আগে সকাল ৯টার দিকে শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে ইমামতি করতে স্থানীয় সার্কিট হাউসে পৌঁছান আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদ। ঈদগাহর পথে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময়ই খবর আসে ঈদগাহর প্রবেশপথে বোমাহামলা হয়েছে। এতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। প্রধান ইমামের অনুপস্থিতিতে আর একজন ইমাম ঈদের নামাজে ইমামতি করেন।

আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুল্লাহ শাকের বাংলামেইলকে বলেছেন, ‘হুজুর (আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদ) সার্কিট হাউসে অবস্থান করছেন। তিনি নিরাপদে আছেন।’

হামলায় গুরুতর আহত ৭ পুলিশ সদস্যকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

সোয়া ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন বাংলামেইলকে বলেছেন, ‘এখনও গোলাগুলি চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি ও র‌্যাব কাজ করছে।’