ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিনোদন প্রতিনিধি, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ :
সিমি ইসলাম কলি। মিডিয়াপাড়ায় পরিচিত প্রযোজক এবং নায়িকা হিসেবে। পরিচয় বাড়াতে হতে চেয়েছিলেন ব্যবসায়ীও। এ জন্য পূর্বপরিচিত জীবন কৃষ্ণ রায় নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মাধ্যমে ফরিদ নামে একজনকে ধাপে ধাপে ৮০ লাখ টাকাও দিয়েছিলেন।
Advertisement
কিন্তু ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি সিমির। উল্টো হয়েছেন মারধরের স্বীকার। বেদম পিটুনি খেয়ে প্রাণ যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল এই প্রযোজক ও নায়িকার। কিন্তু বেঁচে যান ভাগ্যের জোরে। ওই ঘটনা নিয়ে বুধবার বিকাল ৫টায় মগবাজারে এক বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন সিমি। সেখানে তুলে ধরেন বিস্তারিত ঘটনা।
কিন্তু ৮০ লাখ টাকা বিনোয়োগ করলেন, কী এমন সেই ব্যবসা? এমন প্রশ্ন করতেই ঢাকা টাইমস প্রতিবেদকের ওপর ক্ষেপে যান সিমি। রাগান্বিত হয়ে বলেন, `ক্যামেরা বন্ধ কর! তুমি এখন এই প্রশ্ন করতে আসছো কেন? আগে ওরে (জীবন কৃষ্ণ রায়)। ও এসে বলবে কিসের ব্যবসা করে।‘
যদিও এক পর্যায়ে সিমি বলেন যে তার ওই ব্যবসায়িক পার্টনার প্লাস্টিকের ব্যবসা করেন।
যেভাবে বেঁচে ফিরলেন সিমি
এই নায়িকার বয়ান থেকে জানা যায়, তাকে একটি অনুষ্ঠানের কথা বলে নরসিংদীতে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে গিয়ে সিমি দেখেন অনুষ্ঠানের কোনো আলামত নেই। সেখানে একদিন থেকে গত ২৯ জুলাই রাতে ঢাকায় ফিরছিলেন। নরসিংদীর শিবপুর ও রায়পুরা থানার সংযোগস্থল খইনপুর কুটিরবাজার ব্রিজের কাছে পৌঁছালে বাইকচালক (সিমির দেবর) প্রস্রাবের কথা বলে বাইক দাঁড় করে।
Advertisement
এর পরই পাশ থেকে আতর্কিত হামলা চালানো হয় সিমির উপর। বেদম মারধরের পর হামলাকারীরা তার পায়ের রগ কেটে দেয়। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে খইনপুর গ্রামের এক বাসায় নিয়ে তাকে কেটে টুকরো করে বস্তায় ভরতে উদ্যত হয় হামলাকারীরা। কিন্তু সেই মূহুর্তে ওই বাসার এক নারী সেখানে চলে আসায় প্রাণে বাঁচেন সিমি।
সিমির অভিযোগ, `২০২০ সালে আর্থিক সংকটে থাকায় জীবন কৃষ্ণ রায়ের কাছে লগ্নিকৃত টাকা ফেরত চাই। এর পরই সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে। সে আমাকে টাকা না দিয়ে উল্টো তার পা ধরে মাফ চাইতে বলে। একপর্যায়ে আমাকে তার অফিসে ডেকে নানাভাবে হুমকি দেয়।‘
`এরপর গত কোরবানির ঈদের সময় সে আমাকে বলে তুমি আসো আমি তোমাকে টাকাটা ফেলত দেব। অনুষ্ঠানের কথা বলে গত ২৮ জুলাই আমাকে নরসিংদীতে যেতে বলে। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি অনুষ্ঠানের কোনো আলামত না পাওয়ায় ফিরে আসছিলাম। সেই সময়ই পথে এই ঘটনা ঘটে।‘
ঘটনার পর হামলাকারী এবং ওই ব্যাংকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে আহত শরীর নিয়ে নরসিংদীর রায়পুরা থানায় যান সিমি। কিন্তু মামলা না নিয়ে ঘটনাস্থল ব্রিজের ওপারে শিবপুর মডেল থানা এলাকা পড়েছে দোহাই দিয়ে ওই থানায় (শিবপর) মামলা করার পরামর্শ দেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। পরে শিবপুর থানায় গেলে সেখানেও মামলা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ সিমির।
তবে রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোবিন্দ সরকারের দাবি, ওই নারী থানায় আসেননি। তাকেই বরং ফোন করে থানায় এসে মামলা করার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু কী কারণে তিনি সাড়া দেননি তা বোধগম্য নয়। অভিযোগ দিলে তার মামলা গ্রহণ করা হবে।‘
Advertisement
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, `ঘটনাটি আমার থানা এলাকায় না। তার পরও লোকমুখে শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। থানা থেকে একজন কর্মকর্তাকে ভিকটিমের খোঁজে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ওই নারী ঘটনাস্থল রায়পুরা বলে আর আসেননি।‘