প্রেমিকাকে উড়াল সড়ক থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),টঙ্গী পশ্চিম (গাজীপুর) 

প্রতিনিধি , রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ :

বিয়ের প্রলোভনে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সড়কের টঙ্গীর চেরাগ আলী অংশ থেকে মারিয়া আক্তার মুমুকে (২০) ধাক্কা মেরে ফেলে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে নিহতের পরিবার।

Advertisement

গত বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মুমুর বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।

মুমু ফরিদপুর জেলার সদর থানার চরবিষ্ণুপুর গ্রামের মান্নান মিয়ার মেয়ে। সে পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকত। শনিবার দুপুরে গাজীপুরের টঙ্গীতে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিহতের বাবা মান্নান মিয়া।

এই হত্যার ঘটনায় মুমুর প্রেমিক গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকার মোরশেদ অনি (৩০), তার বাবা খলিল মিয়া, বড় বোন রেখোনা, বড় ভাই মোস্তফা, অনির স্ত্রী অনামিকা, শহিদুল্লাহ ও রিয়াদকে আসামী করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।

নিহতের পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মারিয়া আক্তার মুমু রাজধানীর উত্তরার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির বিবিএ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রায় চার বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকার মোরশেদ অনির সঙ্গে পরিচয় হয় মুমুর। তারপর থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা গোপনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।

Advertisement

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ভোর সাড়ে চারটায় মুমু রাজধানীর ভাটারা এলাকার বাসা থেকে প্রায় বিশ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ চার লাখ টাকা নিয়ে প্রেমিক অনির সঙ্গে দেখা করার জন্য টঙ্গীতে গিয়ে পৌঁছান। পরে ভোর পৌঁনে ৬ টার দিকে বিআরটি প্রকল্পের টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকার উড়াল সড়ক থেকে ধাক্কা মেরে মুমুকে নিচে ফেলে দিয়ে অনি ও তার সহযোগিরা সটকে পড়ে। এতে তার দুই পা ও কোমর ভেঙ্গে গুরুতর আহত হন।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে থেকে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হলে পুনরায় তাকে আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে হাসপাতাল থেকে থানা পুলিশে খবর পাঠানো হলে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল আমিন লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান।

মুমুর বাবা মান্নান মিয়া বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে অনির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে বাসা থেকে স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। আমার মেয়েকে অনি ও তার সহযোগিরা উড়াল সড়ক থেকে ফেলে হত্যা করেছে। পুলিশ হত্যা মামলা না নেওয়ায় ঘটনার ছয় দিন পর আদালতে মামলা করেছি।

এবিষয়ে টঙ্গীর শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ইসরাত জাহান এ্যানি বলেন, গত শুক্রবার সকালে অজ্ঞাতনামা তরুণীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার মাথা, কোমর ও পায়ের হাঁড় ভাঙ্গা ছিল।

Advertisement

এ ব্যাপারে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো.জাকির হোসেন বলেন, তাৎক্ষণিক নিহতের পরিচয় সনাক্তে কাজ করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও সিআইডি। নিহতের পরিবারকে থানায় মামলা করতে বলা হয়েছিল। তারা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন।