শিল্পকলা থেকে বেরিয়ে ফেসবুক লাইভে জ্যোতিকা জ্যোতি (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিনোদন প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ :

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এসে অঝোরে কাঁদলেন সহকর্মীদের তোপের মুখে পড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক পদে নিয়োজিত থাকা অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি।

Advertisement

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নিজ কর্মস্থল শিল্পকলা একাডেমি ছেড়ে আসতে বাধ্য হন তিনি। এমন অভিজ্ঞতায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি জ্যোতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে বেশকিছু প্রশ্ন ছোঁড়েন তিনি।

লাইভে এসে জ্যোতি বলেন, ‘কিছু সিন্ডিকেটের কারণে আমি যখন অভিনয়ের কাজ আর পাচ্ছিলাম না তখন আমি চাকরির জন্য দুই জায়গায় এপ্লাই করি। আমার চাকরি শিল্পকলা একাডেমিতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হলেও আমি আওয়ামী লীগের কোনো সুবিধা নিয়ে এ পদে আসিনি। আমার সিভি ৬ মাস ধরে ভেরিফাইড করার পর ২ বছরের চুক্তিভিত্তিক চাকরি দেয়া হয়। তাহলে আমি কেন আমার অফিসে যাব না?
 
জ্যোতি আরও বলেন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমি তো দায়িত্বপ্রাপ্ত, কেন চলে যাব? ডিজি এসে বলেন, এই অবস্থায় কেন এসেছি। আমাকে চলে যেতে বলেন। পরে যে সিদ্ধান্ত হয়, হবে। পরে সচিব স্যার চলে যেতে বলেন। শুধু তাদের কথার কারণে আমি সেখান থেকে চলে আসি।
 
জ্যোতির ফেসবুক লাইভ থেকে আরও জানা যায়, এমন পরিস্থিতিতে জরুরি কাগজপত্র নিতে নিজের রুমে যান জ্যোতি। কিন্তু এসময় তার অফিসরুমের পাশে সহকর্মীরা ভিড় করতে শুরু করেন। এক পর্যায় অভিনেত্রীর ওপর তারা মারমুখী হন।
 
জ্যোতির ভাষায়, সহকর্মীদের সঙ্গে আমি কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। আসলে সমস্যা কী, তা জানার জন্য। তারা কথা বলবেন না। আমাকে দেখার পর কেন তারা মারমুখী হবেন, এর কারণ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কেন আমার সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে?

Advertisement

 
এসময় জ্যোতি কেঁদে বলেন, শিল্পকলার বিএনপিপন্থি অফিসাররাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, কোন অফিসাররা অফিসে আসবেন আর কারা আসবেন না। এমন অরাজকতা আমি কখনও আমার এ বয়সে দেখিনি। একজন ব্যক্তি কোন রাজনৈতিক দল সাপোর্ট করে তার ভিত্তিতে কেন তার অফিসের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেয়া হবে? অথচ আওয়ালীগের সময় কিন্তু বিএনপিপন্থি কোনো অফিসারদের ওপর এমন অন্যায়, অবিচার করা হয়নি।
সবশেষে জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, আমাকে নিয়ে যারা টেনশন করছেন এবং সাংবাদিক ভাই-বোনেরা যারা আমার কাছ থেকে অনেককিছু জানতে চাইছেন তাদের উদ্দেশে আমার ফেসবুক লাইভে আসা। আমি একটা কথাই বলব, শারীরিকভাবে আমি হেনস্তার শিকার না হলেও মানসিকভাবে আমি ভেঙে পড়েছি। আমি এ অপমান, অন্যায় মেনে নিতে পারছি না। কারণ যোগ্যতা দিয়েই এ পদে আমি এসেছিলাম।
 
এদিকে জ্যোতিকা জ্যোতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর আইরিন পারভীন লোপা সংবাদমাধ্যমে বলেন, মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর অফিসে প্রবেশ করেন জ্যোতি। তাকে অফিসে দেখে হতবাক হন সবাই। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে উৎসাহিত করা  ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের সদস্য জ্যোতিকে আমরা তাই অফিস থেকে চলে যেতে বলি।
লোপা আরও বলেন, তাকে নিয়ে অফিসে ক্ষোভ শুরু হলে সবাই একসঙ্গে জড়ো হতে শুরু করি। সহকর্মীদের জড়ো হতে দেখে অফিস রুমের দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। আমরা দাবি তুলি, শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরার জন্য যারা দায়ী, তাদের আমরা সহকর্মী হিসেবে চাই না।

Advertisement

 
জানা যায়, এমন পরিস্থিতিতেই দুপুর দেড়টার দিকে বাধ্য হয়ে নিজের কর্মস্থল শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ছাড়েন অভিনেত্রী জ্যোতি জ্যোতি। আর তারপরই ফেসবুকে লাইভে এ বিষয়ে মন্তব্য করেন তিনি। 
শিল্পকলা একাডেমি থেকে বের হওয়ার পর ফেসবুক লাইভে এসে অঝোরে কাঁদলেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। ছবি: সংগৃহীত