যাত্রাবাড়িতে দুই পুলিশ হত্যা, ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৬ (ভিডিও)

SHARE

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় রাজধানীর যাত্রাবাড়িতে দুই পুলিশ হত্যার অভিযোগে ডেমরা থানা ছাত্রদল নেতা মাসুদ রানাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

Advertisement

গ্রেপ্তাররা হলেন, ডেমরা থানা ছাত্রদল আহ্বায়ক মাসুদ রানা, ইরফান, আবু বক্কর, রবিউল ইসলাম, সৌরভ মিয়া ও তারেক। গত ১৯ এবং ২০ জুলাই পুলিশ সদস্য মুক্তাদির ও গিয়াসউদ্দিনকে হত্যায় তারা সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুক্রবার রাজধানীর মিন্টোরোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ডেমরা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানার নেতৃত্বে পুলিশ হত্যার নীল নকশা বাস্তবায়ন করা হয়। একেকজনের ছিল একেক দায়িত্ব। ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।’

তিনি জানান, ডেমরা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানার নেতৃত্বে ইরফান, আবু বক্কর, রবিউল ইসলাম, সৌরভ মিয়া ও তারেকসহ ২৫-৩০ জনের একটি দল গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করার জন্য যাত্রাবাড়ী থানাধীন রায়েরবাগে অবস্থান করে। এছাড়াও মাসুদ রানার উপস্থিতি এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় ইরফান ও বক্কর আরও কয়েকটি দল নিয়ে এসে মাসুদ রানার সঙ্গে যোগ দেয়। মাসুদ রানার নেতৃত্বে তারা রায়েরবাগ-শনির আখড়া এলাকায় অগ্নিসংযোগ এবং মসজিদের মাইকে গুজব ছড়ানো, থানা আক্রমণ এবং পুলিশ হত্যায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।

Advertisement

হারুন বলেন, রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় তারা এক মোটরসাইকেল আরোহীকে তাড়া করে। তাদের তাড়া খেয়ে মোটরসাইকেল আরোহী রাস্তার পাশে পরে গেলে মাসুদ রানা ও তার সহযোগীরা সেই ব্যক্তির ব্যাগ তল্লাশি করে পুলিশের পোশাক ও আইডি কার্ড দেখতে পায়। তখন তারা পুলিশ পুলিশ বলে চিৎকার করে।

তাদের চিৎকারে আশপাশের অনেকে সেখানে জড়ো হয়। এ সময় তাদের হাতে থাকা হকিস্টিক, বাঁশ, লাঠি ইত্যাদি দিয়ে ওই পুলিশ সদস্যকে মারতে থাকে। ঘটনাস্থলেই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু ঘটে। তার মৃতদেহ নিয়ে তারা উল্লাসে মেতে উঠে। পুলিশের মোটরসাইকেলটিতেও তারা অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। আন্দোলনে যাওয়ার জন্য তাদেরকে কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য তারেক অর্থ সহায়তা দিতো এবং তার নির্দেশে তারা অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের কাজ করে।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, পরের দিন ২০ জুলাই সকালেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। ওই এলাকায় মোটরসাইকেলে করে সাদা পোশাকে একজন ব্যক্তিকে আসতে দেখে দুষ্কৃতকারীরা ধাওয়া করে, তাকে ধরে ফেলে এবং পুলিশ সদস্য বুঝতে পেরে তাদের হাতে থাকা হকিস্টিক, বাঁশ, লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে এবং ঘটনাস্থলেই ওই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু নিশ্চিত করে। তার মোটরসাইকেলটিও একইভাবে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

হারুন অর রশীদ বলেন, এসব ঘটনার উদ্দেশ্য ছিল একটাই পুলিশকে ডিমরালাইজড (মনোবলহীন) করা। পুলিশকে ডিমরালাইজড করতে পারলে তারা হয়তো মনে করেছিল আন্দোলন সফল হবে। পুলিশ দুর্বল হলে পিছিয়ে যাবে। পুলিশ সদস্যদের শুধু পিটিয়ে মেরেছে বা হত্যাই নয়, বাসাবাড়িতে গিয়ে তল্লাশি করে পুলিশ সদস্যকে খোঁজা হয়েছে। এখন আমরাও বাসা-বাড়িতে জামায়াত-শিবির-বিএনপি চক্রকে খুঁজছি। যেখানেই পাবো গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসবো।