যশোর: বছরে শতকোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে আকিজ গ্রুপের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান আকিজ বিড়ি। ব্যান্ডরোল জালিয়াতি ও উৎপাদন কম দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বছরের পর বছর শুল্ক ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে।
এতে সরকার প্রতি বছর শতকোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। তবে, এ কাজে সহযোগিতাকারী শুল্ক বিভাগের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ৭ থেকে ৮ টাকায় ১শ পুরনো ব্যান্ডরোল কিনে নেয় আকিজ বিড়ি কর্তৃপক্ষ। পরে তা নতুন প্যাকেটের গায়ে লাগিয়ে বাজারজাত করে। এছাড়াও ফ্যাক্টরির উৎপাদন কম দেখিয়ে ও নকল ব্যান্ডরোল তৈরি করেও বছরের পর বছর রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে তারা।
যশোরাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার বাজার ঘুরে জানা যায়, বিড়ির খুচরা দোকানে প্রতিমাসেই একাধিক ব্যক্তি পুরনো ব্যান্ডরোল কিনতে যান। দোকানদাররা প্রতি একশ পিস ব্যান্ডরোলের বিনিময়ে মাত্র ৭ থেকে ৮ টাকা পান। তবে, এই ব্যান্ডরোল দিয়ে কি করা হয় তা জানেন না অধিকাংশ দোকানদার।
আকিজ বিড়ির খুচরা বিক্রেতারা বলেন, পুরনো ব্যান্ডরোল এমনিতেই আমরা ফেলে দেই। তবে, বিক্রি করলে যদি কিছু টাকা পাই, সেটা তো পুরোপুরি লাভ। তবে, এই অল্প টাকায় পুরনো ব্যান্ডরোল কিনে কোম্পানি লাভবান হচ্ছে আর সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মাত্র তিন মাসে ৫৯৮ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণ পায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
সেই সময় তদন্তে আকিজ বিড়ির রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। কিন্তু চারদলীয় জোট সরকারের উচ্চ পর্যায়ে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলে আকিজ বিড়ি কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে একই ফর্মুলায় সব মহলকে ম্যানেজ করে কোম্পানিটি সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে তারা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আকিজ বিড়ির শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে, নানাবিধ জটিলতা ও ফন্দি ফিকিরের মাধ্যমে পার পায় প্রতিষ্ঠানটি। তবে, অবিলম্বে শুল্ক গোয়েন্দা সংস্থা আকিজ বিড়ির শুল্ক ফাঁকির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে নাভারণে আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষের কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি।