ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ০৮ আগস্ট ২০২৪, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩১ : রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গত কয়েক দিন ধরে সন্ধ্যার পর থেকে প্রতিটি বাড়ি ও দোকানপাটে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হানা দিচ্ছে ডাকাত দল। ডাকাত দলের আক্রমণ থেকে বাঁচতে মহল্লার মসজিদে মসজিদে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসী সমবেত হয়ে নেমে পড়ছেন পাহারায়। রাত জেগে পুরো এলাকার গলিতে গলিতে লাঠিসোটা হাতে ডাকাত দল প্রতিহত করতে নেমে পড়তে দেখা যায় বাসিন্দাদের।
Advertisement
মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে চাঁন মিয়া হাউজিং এলাকায় ডাকাতির সময় স্থানীয়রা মসজিদে মাইকিং করে ঘেরাও দিয়ে ডাকাত দলের কয়েকজন সদস্যকে আটক করে। এ সময় ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী আসলে তাদের হাতে ডাকাত দলের সদস্যদের তুলে দেয় এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান, সাত মসজিদ হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, চন্দ্রিমা হাউজিং ও নবোদয় বাজার এলাকায় সন্ধ্যার পর গণছিনতাই চলে। এসব ছিনতাইকারী গ্রুপের সদস্যরা একেবারে কম বয়সী। কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্য এরা। বিষয়টি পুলিশকে জানানোহয়। কিন্তু পুলিশ এলাকায় প্রবেশ করতে পারেনি। এখন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
Advertisement
শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর সন্ধ্যার পর থেকে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান, সাত মসজিদ, নবীনগর, চাঁন মিয়া হাউজিং, বাঁশবাড়ি, সোসাইটি লিমিটেড, নবোদয় বাজার, রায়েরবাজার, কাদেরাবাদ হাউজিং ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গণডাকাতি হয়। মোহাম্মদপুরের পাশাপাশি আদাবরের সুনিবিড় হাউজিং, মনসুরাবাদ হাউজিং, নবোদয় হাউজিং, শ্যামলী হাউজিং, শেখেরটেকসহ আশপাশের প্রতিটি বাসা-বাড়িতে দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ডাকাত দল হানা দিচ্ছে।
সাত মসজিদ হাউজিং এলাকার বাসিন্দা জাহিদ হাসান রাতুল জানান, গতো ৭ বছর যাবৎ মোহাম্মদপুরের সাত মসজিদ হাউজিং এলাকায় বসবাস করছি। কোনোদিন এখনকার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখিনি। প্রতিটি বাসায় ঢুকে সাত দলের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা করে সব নিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর পুরো এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে বাসায় বাসায় গিয়ে গণডাকাতি করে ডাকাত দল।
ঢাকা উদ্যান এলাকার আরেক বাসিন্দা ইয়াসিন মিয়া জানান, আমাদের ঢাকা উদ্যান এলাকায় সন্ধ্যা হলেই আতঙ্ক বাড়তে থাকে। কয়েক দিন ধরে আমরা ঘুমাতে পারি না। রাত জেগে ডাকাত দল পাহারা দেই। ডাকাত দলের সদস্যরা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বাড়িতে বাড়িতে হামলা করে সব লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের থেকে রক্ষা পেতে রাতের বেলা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে বাসিন্দারা জড়ো হয়ে রাতভর পাহারা দেয়। কিন্তু এরপরও ডাকাতি ঠেকানো যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে না থাকার সুযোগে এলাকা জুড়ে গণডাকাতি হচ্ছে।
Advertisement
মোহাম্মদপুরজুড়ে এমন ভয়াবহ গণডাকাতির ঘটনার মোহাম্মদপুর এলাকায় সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন সৈকত ইসলাম ও ক্যাপ্টেন সালেহের দেওয়া মোবাইল ফোন নাম্বারে কল দিয়েও তাদের নাম্বারগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। এজন্য তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পুরো মোহাম্মদপুরে সন্ধ্যার পর গণডাকাতি রোধে এলাকাবাসী সেনাবাহিনীকে কল করে তাদের নাম্বার বন্ধ পাওয়ায় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তা কামনা করছেন।