ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),কক্সবাজার প্রতিনিধি,শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১ : লিবিয়ায় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দেশ থেকে লোক নিতো একটি চক্র। সেখানে নেয়ার পর জিম্মি করে চালানো হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এ দৃশ্য ধারণ করে ইমুতে পাঠানো হতো পরিবারের কাছে।
Advertisement
অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান।
ওই দুইজন হলেন, বাদশা মিয়া (৪২) ও তার সহযোগী আরজু বেগমকে (৩১)। তাদের কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
এ বিষয়ে আজাদ রহমান বলেন, মানব পাচারকারী চক্রটি বিদেশগামী অসহায় লোকদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই নিয়ে যায়। তারপর লিবিয়ায় থাকা আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিমের তত্ত্বাবধানে তাদের জিম্মি করা হয়। জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপর একটি চক্রের কাছে হস্তান্তর করে। এই চক্রটি ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে ইমোতে কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করতো।
Advertisement
মুক্তিপণ আদায়ের পর, ভুক্তভোগীদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠিয়ে দিত। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় অনেকেই মারা যান। মারা যাওয়া কিছু লোক উদ্ধার হয় এবং তাদের মধ্য থেকে অল্পসংখ্যক লোক ইউরোপে পৌঁছতে পেরেছেন।
তিনি জানান, ভিকটিম মো. নাছির হোসেন গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর তার চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া যান। সেখানে লিবিয়া প্রবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলসের কাজ করতেন। চার মাস পূর্বে নাছিরকে লিবিয়ার অজ্ঞাত স্থানে মানব পাচারকারী চক্র আটক করে। ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবি করে ভিকটিমের পরিবারের কাছে ইমুতে কল করা হয়। ভিকটিমের পরিবারকে বিভিন্ন বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করে চক্রটি।
পুলিশের তদন্তে দেখা যায়, বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে একটি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। ওই অ্যাকাউন্টে মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯১০ টাকা জমা হয় এবং ১০ লাখ ৯৭ হাজার ২৮৫ টাকা উত্তোলন করা হয়।
Advertisement
বাদশা মিয়াকে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার আবিদ স্টোর নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার প্রতিবেশী সম্পর্কীয় চাচাতো বোন আরজু বেগমের স্বামী রেজাউল করিম লিবিয়ায় মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে জানা যায়। আরজু বেগমকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার বাদশা মিয়া এবং আরজু বেগম আদালতে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে সংযোগ থাকার কথা স্বীকার করেছেন।