কুকি চিন আর্মির নারী শাখার প্রধান সমন্বয়ক গ্রেপ্তার (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),বান্দরবান  প্রতিনিধি, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ি জোনের নারী শাখার প্রধান সমন্বয়ক আকিম বমসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৫। তাদের মধ্যে আকিম দেশ ও বিদেশে প্রশিক্ষণ নেওয়া। এর আগে এক অভিযানে কুকি চিনের ১৮ নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী।

শুক্রবার ভোর ছয়টার দিকে বান্দরবানের লাইমী পাড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অপর জন হলেন লাল সিয়াম লম বম (৬০)।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ছয়টার দিকে সাংবা‌দিক‌দের এ তথ্য জানান র‌্যা‌ব-১৫ অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট ক‌র্নেল এইচএম সাজ্জাদ হো‌সেন।

কে এই আকিম বম

আকিম বম সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০২৩ সালে সে কাল্পা কেউক্রাডং এলাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে ভর্তি হয়। এসময় মাইকেল নামে একটি ছেলে সঙ্গে পরিচয় ও পরে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাইকেলের মাধ্যমেই সে কেএনএফের ট্রেনিংয়ে যায়।

Advertisement

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মানিকারচর গ্রামের রাজনীতিবিদ ও তরুন নেতা তাজুল ইসলাম তাজ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে আনারস মার্কায় বিপুল ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

মেঘনাবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।

যেভাবে কুকি চিনের আস্তানায় আকিম

২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শুরু দিকে এক সন্ধ্যায় আকিম ও মাইকেল পায়ে হেঁটে কেএনএফের ট্রেনিং সেন্টারের দিকে রওনা হয়। পরের দিন ভোর পাঁচটার দিকে তারা রোয়াংছড়ির গহীন পাহাড়ি জঙ্গলের ট্রেনিং সেন্টারে পৌঁছায়। সেখানে পৌঁছানোর পর ভান থার ময়-বম নামে কেএনএফের একজন নারী কমান্ডারের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয় এবং ট্রেনিং সেন্টারে তাদের স্বাগত জানায়।

কুকিদের আস্তানায় আর কারা

আকিমের দেওয়া তথ্য মতে, সেখানে আরও অ‌নেক নারী ছিল। তবে তাদের বেশিরভাগের মুখে কালি মাখা থাক‌তো। যার কার‌ণে অ‌নে‌কেই অপ‌রি‌চিত। মুখের এ কা‌লি প্রতি সাত দিন পর বদল কর‌তো। ট্রেনিং সেন্টারের নাম ছিল কেডিওন (ঈশ্বরের দিকে)। তাদের ব্যাচে ২০ জন প্রশিক্ষণার্থী ছিল। তাদের প্রশিক্ষণ দিতো ৪-৫ জন এবং প্রশাসনিক কাজের জন্য আলাদা সদস্য নিয়োজিত ছিল।

কেমন প্রশিক্ষণ হতো আকিমদের

প্রশিক্ষণের বিষয়ে সে জানায়, ভোর তিনটার দিকে ঘুম থেকে উঠে ট্রেনিং শুরু করতো। প্রশিক্ষণ হিসেবে শারীরিক প্রশিক্ষণ বিশেষ করে মার্শাল আর্ট শেখানো হতো।  প্রশিক্ষণের কষ্ট সহ্য করার জন্য তাদের বেত দিয়ে আঘাত করা হতো। এছাড়া বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য লাঠি দিয়েও আঘাত ও টর্চার করা হতো।

Advertisement

বিশেষ প্রশিক্ষণ

পাহাড় ও জঙ্গলে কীভানে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে হয় এ ব্যাপারে তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। এছাড়াও জঙ্গলে বৈরি পরিবেশে কীভাবে টিকে থাকতে হয় সে প্রশিক্ষণও দিতো। প্রশিক্ষণ চলতো সকাল ১০টা পর্যন্ত। এসময় সাধারণ খাবা‌রের পাশাপা‌শি তারা বনের পাখি, কাঠবিড়ালি শিকার ক‌রেও  রান্না করে খেত। তার প্রশিক্ষণের সময় মেয়েদের একদলে ৫০ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রায় তিন শতাধিক পুরুষ সদস্যও প্রশিক্ষণে ছিল। রুমা এলাকায় আরও দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ প্রশিক্ষণরত ছিল ব‌লেও জানায় সে।

ফিরে দেখা

চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে কেএনএফের সন্ত্রাসীরা রুমা ও থানচিতে সরকারি সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের তিন শাখায় হামলা চালায়। ব্যাংকে লুটপাট ছাড়াও অস্ত্রের মুখে সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে তারা।

Advertisement

থানচিতে তিনটি গাড়িতে চড়ে দিনদুপরে গুলি করতে করতে ব্যাংক ডাকাতি করতে আসে কেএনএফ সদস্যরা।

নগদ টাকাসহ লুট করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলি। পরে র‌্যারের মধ্যস্থতায় অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আলীকদম উপজেলায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি যৌথ তল্লাশি চৌকিতেও হামলা চালায়।

ডাকাতি লুটপাট ও অপহরণের বিভিন্ন ঘটনায় আটটি মামলা হয়েছে। কেএনএফকে দমন করতে সরকারের পক্ষ থেকে যৌথ অভিযান চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।

এরপর সাত এপ্রিল বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। যদিও কুকি চিনদের পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তিকে চেওসিম বলে অস্বীকার করা হয়।

Advertisement

এর পরের দিন আট এপ্রিল বান্দরবানের রুমায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে কুকি চিনের মোট ৪৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৮ জন নারী ছিলেন।