‘মেয়র ছিলাম, এই পরিচয়েই আমি মরতে চাই’

SHARE

meyorচট্টগ্রাম: ‘ছাত্রজীবন থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করছি, জেল খেটেছি, মুক্তিযু্দ্ধ করেছি। আমার রাজনীতি মানুষের জন্য।  মন্ত্রী হবার লোভ আমার নেই। চট্টগ্রামের মেয়র ছিলাম, এই পরিচয়েই আমি মরতে চাই। ’

কথাগুলো বলেছেন সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।  বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘মহিউদ্দিন চৌধুরী মন্ত্রী হচ্ছেন’ এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার প্রতিক্রিয়ায় বাংলানিউজকে এসব কথা বলেছেন বর্ষীয়ান এই নেতা।

নিজ বাসায় বাংলানিউজের মুখোমুখি হওয়ার পর জানতে চাওয়া হয়েছিল, আসলেই তিনি মন্ত্রী হচ্ছেন কিনা ? জবাবে মহিউদ্দিন বলেন, ‘মন্ত্রী হয়ে আমার লাভ ! আমি তো তিনবার চট্টগ্রামের মেয়র ছিলাম।  ১৭ বছর চট্টগ্রামের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি।  মানুষের ভালবাসা পেয়েছি।  মন্ত্রী হলে যে মানুষ ভালবাসবে তার গ্যারান্টি কি ?’

‘মন্ত্রী হতে হবে, মেয়র হতে হবে এ ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে আমি কখনোই রাজনীতি করিনি।  আমার পতাকা লাগেনা।  গণমানুষের মধ্যে যাদের ভিত্তি নেই তাদের সম্বল হচ্ছে পতাকা।  তারা পদ পাওয়ার জন্য যা খুশি তা-ই করে।  প্রয়োজনে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেও তাদের বিবেকে বাঁধে না।  এমন রাজনীতি আমি করিনি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ ধরনের রাজনীতি করার ইচ্ছাও আমার নেই। ’ বলেন মহিউদ্দিন।

তিনি বলেন, ১৭ বছর মেয়র ছিলাম।  এক টাকাও ট্যাক্স বাড়াইনি।  জনগণের উপর করের বোঝা চাপিয়ে দিইনি।  কর না বাড়িয়েও যে উন্নয়ন করা যায়, সেই দৃষ্টান্ত আমিই স্থাপন করেছি।  হেলদি সিটি করেছিলাম।  শিক্ষানগরী করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম।

‘মেয়র হিসেবে সফল হয়েছিলাম।  মন্ত্রী হিসেবে তো আমি সফল না-ও হতে পারি।  ব্যর্থতা নিয়ে আমি বিদায় নিতে চাইনা। ’ বলেন মহিউদ্দিন।

মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে নিরুত্তর থাকেন মহিউদ্দিন।

তিনি বলেন, যতদিন বেঁচে আছি, ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য কাজ করব।  চট্টগ্রামের সন্তানরা শিক্ষিত হয়ে একেকজন যাতে সুনাগরিক হয় সেই উদ্যোগ আমি নেব।  চট্টগ্রামকে শিক্ষানগরী করব আমি।  এজন্য আমার পদের দরকার নেই।  আমি বঙ্গবন্ধুর কর্মী।  মানুষের জন্য কাজ করাই আমার রাজনীতি।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রশংসিত নির্বাচনে তিনবার জয়ী হয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।  ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন।

এর আগে ২০১০ সালে মেয়র নির্বাচনে পরাজিত হন তার রাজনৈতিক শিষ্য বিএনপির প্রার্থী এম মনজুর আলমের কাছে।  অভিযোগ আছে, দলের প্রভাবশালী অংশের চরম বিরোধিতায় পরাস্ত হন মহিউদ্দিন।

এরপর থেকে বেশ কয়েকবার মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব পেলে বারবার তিনি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।