ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(ভিডিও),বিশেষ প্রতিনিধি ,মঙ্গলবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ২৬ চৈত্র ১৪৩০ : সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে বান্দরবানের রুমা ও থানচির তিনটি ব্যাংকে হামলায় অংশ নেয়া কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যদের শনাক্তের কাজ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে থানচির দুটি ব্যাংকে হামলার ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছে কেএনএফের নারী সদস্যরা। আর পাহাড়ের নারীদের এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাটি ভাবিয়ে তুলেছে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের।
গোপন আস্তানায় প্রশিক্ষণ নেয়া কুকি চিনের নারী সদস্যদের মধ্যে তিনজনকে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন- কথিত সৈনিক এজী, থাংনেম পার এবং ভানথারময় ওরফে আমই।
Advertisement
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, গত গত ২ এপ্রিল রাতে কুকি চিনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ভল্ট ভাঙার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অসংখ্যবার চেষ্টা করেও ভল্ট ভাঙতে না পেরে অস্থিরভাবে পায়চারী করছিলেন তারা। তাদের পরনে ছিল সামরিক বাহিনীর কায়দায় পোশাক, তেমনি কমন্ডোদের মতো মুখে ছিলো কালি মাখানো।
https://youtu.be/EbYU8vlVkkM?si=YSPcngsB8kAa7o8h
আরেকটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, গত ৩ এপ্রিল একেবারে দিন দুপুরে থানচি থানা থেকে মাত্র কয়েকশ গজের মধ্যে সোনালী ব্যাংকে হানা দিয়েছে কুকি চিনের সশস্ত্র সদস্যরা। অস্ত্রের মুখে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ সেবা নিতে আসা সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করেন তারা। এ সময় ব্যাংকের ক্যাশে থাকা সব টাকাই লুট করে নিয়ে যান। আর ব্যাংকের ভিতরে তাণ্ডব চালানো সন্ত্রাসীদের মধ্যে অধিকাংশই নারী সদস্য।
এতোদিন পুরুষ সদস্যরা অপহরণ এবং চাঁদাবাজীতে অংশ নিলেও প্রথমবারের মতো কুকি চিন ব্যাংক ডাকাতিতে ব্যবহার করেছে তাদের নারী সদস্যদের। সিসিটিভি ফুটেজে এসব নারী সদস্যদেরই সবচেয়ে বেশি আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গেছে। সবার হাতেই ছিলো অস্ত্র।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা জানান, কেএনএফের নারী সদস্যরা সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ঢুকে মুহূর্তের মধ্যে নগদ যে টাকা ছিল তা নিয়ে দৌড়ে গাড়িতে ওঠেন। এ ছাড়া বাইরে তিনটি গাড়ি তারা ব্যাবহার করেন। সেখানে তাদের পুরুষ সহযোগীরাও ছিলেন।
Advertisement
এ ঘটনায় গত ২ এবং ৩ এপ্রিল হামলার ঘটনায় বান্দরবানের রুমা থানায় ৫টি এবং থানচি থানায় ৩টি মামলায় করা হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইনের পাশাপাশি অস্ত্র ও ডাকাতি এবং অপহরণের অভিযোগে এসব মামলা হলেও এজাহারে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে নাম পরিচয় না পাওয়ায় তাদের নাম উল্লেখ করা না গেলেও তদন্ত প্রতিবেদন নাথান বমসহ সবার দায় হিসাবে অভিযুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি।
https://youtu.be/H7TbJwEpx_I?si=U8CCShMb2SLrRC4A
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা আরও বলেন, আমরা যতোটুকু তথ্য বা সাক্ষ্য পাবো তা দিয়েই প্রমাণ করবো যে ওই আসামিরা সেখানে ছিলেন। তাদের গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যাবে কার নেতেত্বে কে কে সেখানে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল কেএনএফ রুমার সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যের ১৪ টি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় এবং এরপর দিন থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ১৭ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করলেও ৪৬ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করে র্যাব।
Advertisement
২০২২ সালে সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে পাহাড়ে আত্ম প্রকাশ করে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।