ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,বান্দরবানের থানচি প্রতিনিধি,শুক্রবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ২২ চৈত্র ১৪৩০ : আগুন আতঙ্কের কারণে বান্দরবানের থানচি বাজার থেকে দোকানের মালপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার রাতে থানার আশেপাশের গোলাগুলি এবং আগের দুই দিনের ডাকাতিকাণ্ডের পর অনেকেই এলাকা ছেড়েছিলেন। তারপরও আতঙ্ক নিয়েই কয়েকজন বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
Advertisement
কিন্তু শুক্রবার রাত হতে না হতেই দোকান থেকে মালপত্র সরিয়ে পাকা দোকান বা নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন দোকানিরা। তারা জানান, এরকম পরিস্থিতিতে আগেও একাধিকবার বাজারে আগুন ধরিয়ে দিতে দেয়া হয়েছিলো। এ জন্যই তারা এ সতর্কতা নিচ্ছেন।
বন্ধ রয়েছে থানচি বাজারের বেশিরভাগ দোকানপাট। আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন অনেক নারী ও শিশু। থানচি এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও পুলিশের সতর্ক পাহারা দেখা গেছে। পুলিশ বলছে, নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আতঙ্কের কোনো কারণ নেই।
তবে বৃহস্পতিবার রাতের হামলায় পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গেছে এলাকার মানুষ। খুব প্রয়োজন ছাড়া দোকানে আসছেন না কেউ, আবার ব্যবসায়ীরাও দোকান খুলছে না। আতঙ্কে দিনরাত পার করছেন থানচি বাজারের প্রায় দেড়শ পরিবার। গোলাগুলির সময় তারা সবাই পাশের জঙ্গলে অবস্থান নেন।
থানচি বাজারের তরমুজ বিক্রেতা আব্দুল হক জানান, পরপর তিনদিন বান্দরবানের রুমা বাজার, থানচির তিন ব্যাংকে ডাকাতি এবং থানচি থানার আশেপাশে গোলাগুলিতে আতঙ্কিত এলাকার লোকজন। তাই বাজারেও বেশিরভাগ দোকান পাটই বন্ধ। ক্রেতার অভাবে পচে যাচ্ছে তার তরমুজ।
Advertisement
একই অবস্থা এই বাজারের বেশিরভাগ ব্যবসায়ীর। বৃহস্পতিবার রাতভর থানা এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলির পর থানচির হোটেল রিসোর্টের মালিক কর্মচারীরাও এলাকা ছেড়েছেন। বান্দরবানের দুই উপজেলায় গত মঙ্গলবার রাতে ১৭ ঘণ্টার মধ্যে দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা, অস্ত্র লুট ও অপহরণের ঘটনা ঘটে।
আর বৃহস্পতিবার রাতে থানচি থানা লক্ষ্য করে গুলি করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী। পরে গভীর রাতে আলীকদম উপজেলায় পুলিশ ও সেনাদের একটি যৌথ তল্লাশিচৌকিতে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তবে কারা গুলি চালিয়েছে, এ বিষয়ে পুলিশ স্পষ্ট করে কিছু বলেনি।
বান্দরবানের সহকারী পুলিশ সুপার জুনায়েদ জাহেদী জানিয়েছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তিন থানায় তদারকের জন্য একজন করে এএসপিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। থানচি থানায় অতিরিক্ত আরও ১০০ পুলিশ সদস্য যোগ দিচ্ছে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা বড় ধরনের পরিকল্পনা করে বাজার ও পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়েছিল। পুলিশ, বিজিবি তাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে। আরও অধিক সংখ্যক পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিয়োজিত আছে। পুলিশ-বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।
বান্দরবানের ঘটনায় রুমা ও থানচি থানায় ছয়টি মামলা হয়েছে। মামলায় আলাদা তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি, পুলিশ ও আনসারের অস্ত্র লুট, থানায় হামলা ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের অভিযোগ করা হয়েছে।
Advertisement
বান্দরবানের সার্বিক পরিস্থিতি দেখতে শনিবার সেখানে যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে বান্দরবানে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী বান্দরবানের রুমাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন। এ সময় তিনি বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।