ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),মো: ইব্রাহীম খলিল মোল্লা মেঘনা থেকে,শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪ : বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, পালিত হয় দুই থেকে তিনটি। এরমধ্যে শীতের ঋতুতে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়া পড়তে দেখা যায়। কিন্তু এর ব্যতিক্রম দেখা মিলেছে একটি অঞ্চলে। শীতকাল পেড়িয়ে যখন বসন্তকালের চৈত্রমাসে পদার্পণ ঠিক তখনই কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় তীব্র গরমে শীতের কুয়াশা পড়তে দেখা গেছে। মাসের শুরুতে সপ্তাহজুড়ে একদিন অন্তর প্রতি রাতে হালকা কুয়াশার দেখা মিলে এই এলাকাজুড়ে।
Advertisement
বসন্তকালের চৈত্রমাসের ৯ম দিনে প্রচণ্ড দাবদাহের মাঝে শনিবার (২৩ মার্চ) দিনগত রাত ২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ২১° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে পড়ে। এদিকে ভোর থেকে প্রায় সকাল ৭টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকায় সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করেছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। চৈত্র মাসের শুরুতে এমন ঘনকুয়াশা পড়তে ইতোপূর্বে দেখেননি অনেকেই।
এটা ঋতুর বৈচিত্র্যতা বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন। আবার মাঝেমধ্যে ঝড়বৃষ্টিও হয়। অন্যদিকে গরমের তাপমাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে এবং কখনও কখনও হালকা শীতের পরশও লাগছে। রাতের কুয়াশার মাখামাখিতে মেঘনায় এক অন্যরকম প্রাকৃতিক পরিবেশ বিরাজ করায় তা মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে এবং তারা বিস্মিতও হয়েছেন। কুয়াশা দেখে মনে হচ্ছে যেন এখন শীতকাল। কেউ কেউ বলছেন এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
Advertisement
শিক্ষিত সমাজের লোকদের সাথে আলাপচারিতায় বসলে তারা বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করে জানান, অসময়ের কুয়াশাটা প্রকৃতি আমাদের মাঝে যেন একটা বিরূপ মনোভাব পোষণ করেছে। এ সময়ে কুয়াশাটা কাম্য নয়। কুয়াশাটা সাধারণত শীতকালেই হয়। এ সময়ে কুয়াশাটা আসছে এবং কেন আসছে আল্লাহ ভালো জানেন। এটা প্রকৃতিতে কতটুকু ফলপ্রসূ বয়ে আনবে এটা আসলে আমরা অনুধাবন করতে পারছি না।
এদিকে ‘নূর-মজিদ আয়ুর্বেদিক কলেজ’ এর অধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ মামুন মিয়া আমাদের এই সংবাদকর্মীকে বলেন, এ ধরনের কুয়াশা রোগ-বালাইয়ের লক্ষণ। অসময়ে আবহাওয়ার তারতম্য মানুষের শরীরের জন্য মোটেই উপযোগী নয়। এই আবহাওয়ায় মানুষের ইনফ্লুয়েঞ্জা ও ভাইরাল জ্বরসহ আরও অনেক রোগ দেখা দিতে পারে। তবে আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় এটিকে বলে ‘লো ক্লাউড’ বা নিচু মেঘ।
Advertisement
অন্যদিকে মেঘনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহে আলম ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)কে বলেন, ইদানীং বেশ কিছুদিন যাবৎ রাতের বেলা নিন্ম তাপমাত্রা ও দিনের বেলা উচ্চতাপমাত্রা বিরাজ করছে। এমন তাপমাত্রায় আমের মুকুল ও গুটির জন্য ক্ষতিকর। আমের মুকুলে ‘পাউডারি মিলডিউ’ নামে এক ধরনের রোগ দেখা দেয়। এতে আমের মুকুল ঝরে পড়ে।
অপরদিকে পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়। ফলে ফলগাছ ও মাঠ ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।