ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,রোববার, ১৭ মার্চ ২০২৪ : দ্রুত ফুরিয়ে আসছে সোমালিয়ান জলদস্যুদের দখলে থাকা এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের খাবার ও পানি। এর মধ্যে জিম্মি নাবিকদের খাবারে ভাগ বসাচ্ছে সশস্ত্র ১১ জলদস্যু। এদিকে, জাহাজে বহন করা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা উত্তপ্ত হতে থাকায়, বিস্ফোরণের শঙ্কাও বাড়ছে। এ অবস্থায়, মুক্তিপণ সংলাপের শুরুতেই জাহাজকে নিরাপদ করার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
Advertisement
ভারত মহাসাগর থেকে গেল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) এমভি আবদুল্লাহ নামে বাংলাদেশি একটি জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এ ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ হতে চললেও, দস্যুদের পক্ষ থেকে এখনো যোগাযোগ না করায় এগোয়নি নাবিকদের উদ্ধারের আলোচনা। বারবার পরিবর্তন করা হচ্ছে জাহাজটির অবস্থানও। আর এর মধ্যেই সেখানে নতুন শঙ্কা এখন ওই জাহাজে থাক কয়লা।
মূলত আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে এ কয়লা পৌঁছানোর কথা দুবাইতে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাহাজে যখন কয়লা বোঝাই করা হয় তখন প্রতি ২৪ ঘণ্টায় এ কয়লা পরিমাপ করতে হয়। কারণ এটি দাহ্য পদার্থ হওয়ায় সেখানে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ যেমন বাড়ে, তেমনি কমে যায় অক্সিজেন। আর এর ফলে সামান্য আগুনেই জাহাজটিতে ঘটতে পারে বিস্ফোরণ।
Advertisement
এ বিষয়ে মাস্টার মেরিনার ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী বলেন, মিথেন খুবই দাহ্য একটি গ্যাস। যেকোনো সময় এতে আগুন ধরতে পারে। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে আমরা কাউকে ডেকে সিগারেটও খেতে দেই না। কারণ, সামান্য সিগারেটের আগুন থেকে সেখানে বড় বিস্ফোরণ হতে পারে।
তবে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, সোমালিয়ার জলদস্যুরা নাবিকদের কাজ করার কিছুটা সুযোগ দিচ্ছে। যদিও এর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
এর আগে সোমালিয়ার দস্যুদের হাতে জিম্মি হয়েছিল এমভি জাহানমণি নামের একটি জাহাজ। মো. ইদ্রিস নামে ওই জাহাজের এক নাবিক জানিয়েছেন, তাদের যখন বন্দি করে রাখা হয়, তখন কোনো কাজ করতে দেয়া হয়নি। এর ফলে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে বিস্ফোরণের।
উল্লেখ্য, মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি ওই জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা।
এদিকে, ভারত মহাসাগরে বিশেষ কমান্ডো অভিযান চালিয়ে সোমালিয়ার জলদস্যুদের ছিনতাই করা একটি বাণিজ্যিক জাহাজ দখলে নিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। মাল্টার পতাকাবাহী ‘এমভি রুয়েন’ নামের ওই জাহাজটি গত বছরের শেষ দিকে ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা।
Advertisement
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী বলছে, গত সপ্তাহে সোমালিয়ার উপকূলে বাংলাদেশের পতাকাবাহী একটি কার্গো জাহাজ দখলের জন্য এই জাহাজটিকে বেস বা ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী জানিয়েছে, সোমালি জলদস্যুরা গত বছরের ডিসেম্বরে মাল্টিজ-পতাকাবাহী বাল্ক কার্গো জাহাজ রুয়েন ছিনতাই করেছিল। আর সেই জাহাজটিই তারা দুই দিন আগে সোমালিয়ার উপকূলে বাংলাদেশের পতাকাবাহী একটি কার্গো জাহাজ (এমভি আবদুল্লাহ) দখলে নিতে ব্যবহার করতে পারে।