ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি,শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর ৪৫ বছর পেরিয়ে ৪৬ বছরে পদার্পণ করেছে। বয়সের বিচারে প্রবীণ এই দলটি চার দশকে রাজনৈতিক দল হিসেবে যে পরিপক্বতা অর্জন করার কথা, ততটা কি হতে পেরেছে? সংসদে প্রতিনিধিত্ব না থাকলেও সরকার পতনের ডাক দিয়ে শক্ত আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ দলটির শীর্ষ নেতারা যখন বিভিন্ন নাশকতার মামলায় নাজেহাল, ঠিক তখনই কারামুক্তি পেলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শীর্ষ দুই নেতার কারামুক্তির পর নতুন প্রশ্ন যোগ হয়েছে: বিএনপি এখন কী পন্থা অবলম্বন করবে বা আবারও কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বিএনপি!
Advertisement
জাতীয় নির্বাচন ঠেকানোর ঘোষণা
সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকানোর ঘোষণা দেয় বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে ভোট ঠেকাতে লাগাতার হরতাল-অবরোধ-অসহযোগের মতো কর্মসূচি দেয় বিএনপি। কিন্তু এতসব কর্মসূচির মধ্যেই ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি ছিল বিপুলসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচন বর্জন করে ভোটগ্রহণ ঠেকানোর ঘোষণা দিলেও কার্যত নির্বাচনের দিন মাঠে ছিলেন না বিএনপির নেতাকর্মীরা। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের তেমন কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়েনি। ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে পড়ে বিএনপির কার্যক্রম। মূলত নেতৃত্ব সংকট, দোদুল্যমানতা, সিদ্ধান্তহীনতা ও ক্ষেত্রবিশেষে হঠকারিতাই এর অন্যতম কারণ।
Advertisement
নির্বাচন-পরবর্তী কর্মসূচি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২০ দিন পর আবারও নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে বিএনপি। এর পর ২৭ জানুয়ারি রাজধানীসহ সব মহানগরে কালো পতাকা মিছিল করে তারা। আর ডামি সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ফের ৩০ জানুয়ারি দেশের সব মহানগর, থানা, জেলা, সদর, সব উপজেলা ও পৌরসভায় কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এভাবে একের পর এক আন্দোলনের ডাক দিয়ে রাজপথে সরব হওয়ার চেষ্টা করে দলটি। সর্বশেষ ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে লিফলেট বিতরণ করে বিএনপি।
Advertisement
ফখরুলসহ শীর্ষ দুই নেতার জামিন
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জামিনে কারামুক্ত হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। জেল থেকে বেরিয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেন মির্জা ফখরুল।
Advertisement
যেভাবে এগোতে চায়
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ক্ষুব্ধ অনেকেই মনে করেন, বিএনপি নেতাদের দাবি, সরকারের দমন-পীড়নের কারণে তারা আন্দোলন জোরদার করতে পারছেন না। তাদের নিশ্চয়ই জানা আছে যে অতীতে কোনো সরকারই বিরোধী দলকে জামাই আদরে রাখেনি। জেলজুলুমের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই বিরোধী দলকে আন্দোলন করতে হয়।
অন্যদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদীন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আন্দোলন তো এখনও কিছু দেখেননি। নির্বাচনের পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে আন্দোলন হয়েছে, ঠিক সেভাবেই এ দেশেও আন্দোলন হবে। আন্দোলন মাত্র শুরু। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটা ভিন্ন রূপ আছে। সেই রূপটা এখনও শুরু হয়নি।
Advertisement
শামসুল আলম সেলিম বলেন, শীর্ষ নেতাদের মুক্তির ফলে বিএনপির ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীরা আবারও উজ্জীবিত হতে শুরু করেছে। দলীয় মহাসচিবও নতুন করে চাঙা হওয়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পরবর্তী আন্দোলনের ডাক দেবেন। এভাবে চলতে থাকলে সরকার পদত্যাগ এবং পুনরায় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে।