ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),সাংবাদিক ইব্রাহীম মেঘনা থেকে,বৃহস্পতিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ :: কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় ১নং রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আশীষ কুমার আচার্য্য’র বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই তরুণী তালতুলী গ্রামের জীবন মিয়ার মেয়ে মুক্তা আক্তার (২০)। অনুসন্ধান করে জানা যায়, দীর্ঘ কয়েকমাস যাবৎ একই এলাকার হনুফার সঙ্গ মুক্তার চলাফেরাসহ তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া এমনকি মাঝেমধ্যে ভূরিভোজনও হতো। এরই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হনুফার ‘মা’ জরিনা বেগম ও তার সহযোগী ভাড়াটিয়া মোহাম্মদ আলী ৬ মাস পূর্বে মুক্তাকে ফুসলিয়ে নিয়ে সচিবের কাছে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে তার কাছে মুক্তাকে তোলে দেন। পরে মুক্তাকে ইউনিয়ন পরিষদের এক অফিস কক্ষে নিয়ে সচিব আশীষ কুমার আচার্য্য শারীরিক মেলামেশা করেন। এদিকে কেউ আসে কিনা সেটা দেখার জন্য জরিনা পাহাড়ায় দাড়িয়ে ছিলেন। পরে মুক্তাকে জরিনা দুই শত টাকা হাতে দিয়ে বাড়ি যেতে বলে। আর ইউপি সচিব কাউকে বা পরিবারকে কিছু বললে গলা কেটে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। সহজ সরল প্রতিবন্ধী তরুণী মৃত্যুর কথা শুনে ভয়ে পরিবারকে কোনোকিছু জানায়নি। কয়েকমাস যাওয়ার পর মুক্তা বুঝতে পারে তার পেটে বাচ্চা। বুঝতে পেরে ভুক্তভোগী দৌড়িয়ে জরিনাকে জানান, পরে ঔষধ সেবন করে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলে দেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর এভাবেই কাটতে থাকে মুক্তার সময় গুলো। ছয় মাস যাওয়ার পর যখন মুক্তার পেট বড় হয়ে যায় তখনই তার ‘মা’ মনে করেছিলো হয়তো মেয়ের পেটে কোনো সমস্যা আছে। আর দেরি না করে মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জানতে পারে মেয়ে ছয় মাসের অন্তসত্ত্বা। একপর্যায়ে মুক্তার মা মুক্তাকে ধমক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলে সবকিছু শিকার করে। পরে মুক্তার মা আত্ম-সম্মানের দিকে তাকিয়ে বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে পূনরায় নিশ্চিত হওয়ার জন্য গত ৪ই ফেব্রুয়ারী হোমনার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে সেখানেও ডাক্তার একই কথা বলে। পরে ওইদিন ঢাকা ‘মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট’ মাতুয়াইল নিয়ে ভর্তি করিয়ে বাচ্চা নষ্ট করা হয়।
Advertisement
হনুফার মা জরিনা বেগমের কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না, আগে আমার মেয়ের সঙ্গে মুক্তা চলাফেরা করতো কিন্তু এখন আর করে না। এদিকে ভাড়াটিয়া আলীর সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আশীষ কুমার আচার্য্য এর কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার নামে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
Advertisement
কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা ভুক্তভোগী মুক্তার বাবা জীবন মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি গরীব মানুষ। মামলা চালানোর মতো টাকা-পয়সা আমার নেই। তাই আমি মামলা করতাম না। আমি এদের সাথে লড়াই করে পারতাম না৷ আমি আপনাদের কাছে বিচার চাই। সরকারের কাছে বিচার চাই।
Advertisement
এব্যাপারে রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান (মজি) তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, মুক্তা আক্তার আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং আমার মেয়ের মতো, আমি এই বিষয়ে জানার পর তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরে ঘটে যাওয়া ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পেয়েছি। একে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচার করা হবে।
Advertisement
মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে আমাদের কাছে অভিযোগ আসলে সঙ্গে সঙ্গে মামলা নিব।
Advertisement