ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি,সোমবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ : দীর্ঘদিনের প্রচলিত ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে কাজ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন তৃতীয় লিঙ্গের অনেক মানুষ। বিউটিশিয়ান, কলকারখানার শ্রমিক, নিরাপত্তা কর্মী এমনকি স্বাধীন ব্যবসাও করছেন অনেকে। হিজড়াদের স্বাবলম্বী হওয়ার এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে হিজড়াদের আরও এগিয়ে যেতে কর্মমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করারও তাগিদ দিয়েছেন তারা।
Advertisement
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের একজন সোহাগী পেশায় বিউটিশিয়ান। সাভারের হেমায়েতপুরে তার একটি বিউটি পার্লার আছে। আর নাসিমা রহমান নামে আরেক হিজড়ার আছে জেন্টস পার্লার ও ফুড কর্নার।
সাধারণ মানুষের কাছে চেয়েচিন্তে টাকা তুলে তুলেই জীবন চালায় বেশিরভাগ হিজড়া। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই কাজ করে স্বাবলম্বী হতে চেয়েছিলেন সোহাগী ও নাসিমা।
সোহাগী ও নাসিমা জানান, সাধারণ মানুষ যেভাবে চলাফেরা করে তারা তা করতে পারেন না। নানান ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন তারা। কিন্তু এরপরেও নিজেদের প্রচেষ্টায় কিছু করতে পেরে খুশি তারা।
Advertisement
চার ভাই-বোনের সবার ছোট আঁখির ইচ্ছা ছিলো লেখাপড়া করার। কিন্তু পরিবারের অনাগ্রহ আর সহপাঠীদের রূঢ় আচরণে অষ্টম শ্রেণির পরই ঘর ছেড়েছেন।
সাভার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী আঁখি জানান, তিনি যেমন ভালো নাচ করতে পারেন তেমনি পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে চান।
সোহাগী, নাসিমা, আঁখির মতো নিজের পায়ে দাঁড়াতে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হচ্ছেন অনেক হিজড়া। কেউ কেউ নিচ্ছেন উচ্চশিক্ষা। তাদের এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করছেন সাধারণ মানুষ।
Advertisement
স্থানীয় মানুষও বিভিন্ন পেশায় হিজড়াদের যুক্ত হওয়ার বিষয়টি ভালোভাবে দেখছেন।
সম্মানজনক পেশায় হিজড়াদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাশার চেয়ে কম হলেও একটি ইতিবাচক ধারা শুরু হয়েছে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের মানসিকতার পরিবর্তনও জরুরি, বলছেন তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ অধ্যাপক ড. রশিদ হারুন বলেন, জেন্ডারে সমস্য হলেই যে মানুষটা বাতিল হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। সবাইকে সচেতন হতে হবে।
Advertisement
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক জরিপ অনুযায়ী দেশে হিজড়াদের সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। তাদের মধ্যে শিক্ষিত মাত্র দুই শতাংশের সামান্য বেশি। তাই হিজড়াদের কর্মমুখী শিক্ষাদানের উপর গুরুত্ব দেয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।