অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এইচ এম সালাউদ্দীন মনজু
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি,বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ : নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে কার্টন ভর্তি ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এইচ এম সালাউদ্দীন মনজুকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।
Advertisement
সোমবার (২২ জানুয়ারি) এক প্রজ্ঞাপন জারি করে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে সংযুক্ত করা হয়। ৩১তম বিসিএস ব্যাচের এই কর্মকর্তা ২০২২ সালের ৫ জুন নারায়ণগঞ্জে যোগদান করেন।
এর আগে ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত সার্ভেয়ার কাওসার মাহমুদকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার অপর আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের প্রাক্তন আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম সুমন পলাতক রয়েছেন। যদিও টাকা উদ্ধারের ঘটনায় আলোচনায় আসা রানা নামের এক ব্যক্তির পরিচয় ও পেশা নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।
Advertisement
দুদক সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি রাত দশটার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের প্রাক্তন আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম সুমন একটি কার্টনসহ নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে আটক হন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই কার্টন খুলে ৪২ লাখ টাকা পাওয়া যায়। পরে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে টাকাগুলো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কোষাগারে জমা রাখা হয়।
জব্দ করা ৪২ লাখ টাকার সঙ্গে দুর্নীতির সম্পৃক্ততা আছে ধারণা করে গত ১৪ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি দেন। পরে ১৬ জানুয়ারি দুদক তাদের জেলা কার্যালয়ে মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারায় একটি মামলা করে। ওই মামলায় জাহিদুল ইসলাম সুমন ও কাওসার আহমেদকে আসামি করা হয়। কাওসারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আর জাহিদুল ইসলাম সুমন পলাতক রয়েছেন বলে জানায় দুদক।
Advertisement
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই কার্টন ভর্তি টাকা অন্য এক ব্যবসায়ীর বলে দাবি করে জাহিদুল ইসলাম সুমন। যদিও ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই টাকা তার নয়। সার্ভেয়ার কাওসার ওই ব্যবসায়ীকে অনুরোধ করেছিলেন যেন ওই টাকা নিজের বলে দাবি করেন। সামগ্রিক বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে আমি দুদকে চিঠি দেই। দুদকও তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় জাহিদুলের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো অভিযোগ না থাকায় তাকে আটক বা গ্রেপ্তার করার সুযোগ ছিল না। এখন যেহেতু মামলা হয়েছে তিনি অবশ্যই গ্রেপ্তার হবেন। এদিকে ওই সার্ভেয়ারকে সাময়িক বরখাস্তের কথাও জানান জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক।
Advertisement
টাকা উদ্ধারের ঘটনায় জনৈক রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও মামলায় তাকে আসামি করা হয়নি। কার্টন ভর্তি ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় রানা নামে এ ব্যক্তি কে এবং কেন দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট অর্থে নাম এসেছে তার, তা নিয়ে শহরজুড়ে চলছে আলোচনা। তবে জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, রানা নামে ওই ব্যক্তি জেলার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে ঘুষের ৪২ লাখ টাকা ভর্তি কার্টন উদ্ধারের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মো. কাওসার আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।