তিতাসে এক ডাকাতের হাতে আরেক ডাকাত খুন

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),তিতাস প্রতিনিধি ,মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ : নিজের আঘাতের পাল্টা প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে এক ডাকাতকে কুপিয়ে মারলো আরেক ডাকাত। সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার তিতাসের নারান্দিয়া ইউনিয়নের নয়াচর গ্রামে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে।

Advertisement

নিহত মো. মোস্তফা মিয়া একই উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের রঘুনাথপুর নয়ানী মুন্সি বাড়ীর আবুল হাসেম মিয়ার ছেলে এবং ভিটিকান্দি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। উক্ত ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রোজিনা বাদী হয়ে ৩জননের নাম উল্লেখপূর্বক ৪/৫জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রঘুনাথপুরের আবুল হাসেম মিয়ার ছেলে মোস্তফা মিয়া (৩৮) ও হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী একই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাইদুল (৩৬) এলাকায় চিহ্নিত ডাকাত দলের সদস্য বলে পরিচিত।

আসামী সাইদুলের বিরুদ্ধে ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মুরাদনগর ও তিতাস থানায় ৩টি করে ৬টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। অপরদিকে, নিহত মোস্তফা মিয়ার বিরুদ্ধে ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিতাস থানায় ৩টিসহ কুমিল্লার দাউদকান্দি ও চৌদ্দগ্রাম, গাজীপুরের কালীগঞ্জ, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা মডেল থানায় ১টি করে মোট ৭টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। মোস্তফা ও সাইদুল একই ডাকাত দলের সদস্য হলেও তাদের মধ্যে এক বছর পূর্বে ডাকাতির সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

Advertisement

গত বছরের মাঝামাঝি সময় নিহত মোস্তফা ও তার আরেক সহযোগী নয়ন ওরফে রেনু মিয়া মিলে আমিরাবাদ-কচুয়া-চাঁদপুর সড়কের সাচার এলাকায় আসামী সাইদুলকে কুপিয়ে, হাত ও পা’য়ের রগ কেটে মৃত ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে।

পরবর্তীতে সে ভারতের মাদ্রাজে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে আসে। সেই থেকে তাদের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। উক্ত ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই সাইদুল পরিকল্পিত ভাবে পাল্টা প্রতিশোধ নিতে একই কায়দায় মোস্তফাকে কুপিয়ে হত্যা করে। উক্ত ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রোজিনা বাদী হয়ে তিতাসের রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাইদুল, একই গ্রামের মো. হোসেন মিয়ার ছেলে মো. মাইন উদ্দিন এবং পাশ্ববর্তী দাউদকান্দি উপজেলার খোশকান্দি গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে নাজিম উদ্দিনসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫জনকে আসামী করে মঙ্গলবার সকালে তিতাস থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

নিহতের স্ত্রী রোজিনা জানান, আমার ২ ছেলের মধ্যে একজন বিদেশে। ছোট একটি মেয়ে রয়েছে। সোমবার দুপুরের খাবার শেষে আমার স্বামী নয়াচর গ্রামের হোরন মিয়ার চা দোকানের সামনে তাস খেলতে ছিল। তখন সাইদুল আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেন। নাজিম উদ্দিন ও মাইন উদ্দিনের যোগসাজসে সাইদুল আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আরিফুজ্জামান খোকা জানান, নিহত মোস্তফা ও প্রধান আসামী সাইদুল এলাকায় চিহ্নিত ডাকাত বলে পরিচিত। রঘুনাথপুর গ্রামের কয়েকটি পরিবার ডাকাতির সাথে সম্পৃক্ত। দুইজনের মধ্যে পূর্ব থেকেই বিরোধ চলে আসছে।

Advertisement

তিতাস থানার ওসি কাঞ্চন কান্তি দাশ জানান, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিহতের পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। নিহতের শরীরের ডান ঘাঁড়ে, মাথার শেষ ভাগে, ডান চোয়ালে এবং নাকের উপরে কপালে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত মোস্তফা ও সাইদুলের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১৩টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ঘটনার পর থেকে আসামীদ্বয় পলাতক থাকলেও তাদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।