ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি,শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩ : পর্যটন শহর কক্সবাজারের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ সহজ ও সাশ্রয়ী করতে বহুল কাঙ্ক্ষিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি।
Advertisement
১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ চালুর ফলে পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। এখন কম খরচে বিলাসবহুল ট্রেনে চড়ে পর্যটকরা বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত দেখার সুযোগ পাবেন। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সহায়তা দিয়েছে ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা এবং বাকি ৪ হাজার ১১৯ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশন দেখে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। ২৯ একর জমির ওপর ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের সব থেকে সুন্দর রেলস্টেশন। যার নিচতলায় থাকছে টিকেট কাউন্টার, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, শপিংমল ও রেস্তোরাঁ। এছাড়া, আইকনিক স্টেশনে থাকছে তারকা মানের হোটেল, মসজিদ, শিশু যত্ন কেন্দ্র ও চলন্ত সিঁড়ি। আরও আছে এটিএম বুথ, পোস্ট অফিস, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন বুথসহ নানা সুবিধা।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক রেলস্টেশনে একসঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন অন্তত ৪৬ হাজার যাত্রী। দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশনের দূরত্ব সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে। ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের ছয় তলা ভবনের রেলস্টেশনে চারদিকে গ্লাস ফিটিংস ও চীন থেকে আনা স্টিলের ক্যানোফি স্থাপন করা হয়েছে।
Advertisement
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণকাজের প্রকল্প পরিচালক মো. সুবক্তগীন বলেন, শুরুতে নতুন রেলপথে ৫০-৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলবে। ধীরে ধীরে তা ৮০ কিলোমিটারে নেওয়া হবে। বর্তমানে ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছাতে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। সেই হিসাবে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যেতে ৭ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।
রেললাইনটি বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। পরিবেশ রক্ষা ও বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সুবক্তগীন বলেন, এখানে হাতির জন্য আন্ডারপাস এবং ওভারপাস করা হয়েছে। যাতে তারা একপাশ থেকে অন্য পাশে যেতে পারে। দীর্ঘদিন সিসিটিভি ফুটেজ মনিটরিং করে ডিজাইন করা হয়েছে।
Advertisement
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণকাজ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়েছে- ৯টি রেলওয়ে স্টেশন, ৪টি বড় ও ৪৭টি ছোট সেতু, ১৪৯টি বক্স কালভার্ট এবং ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট। এই রেলপথ নির্মাণের আগে কক্সবাজারের সঙ্গে কোনও রেল যোগাযোগ ছিল না।