ভিডিও ভাইরাল হাত-পা বেঁধে, মাটিতে পুঁতে, পানিতে চুবিয়ে নির্যাতন (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি ,রোববার, ২০ আগস্ট ২০২৩ : রাজশাহীর চারঘাটের শলুয়া গ্রামে টাকা চুরির অভিযোগে দুই যুবককে হাত-পা ও চোখ বেঁধে, মাটিতে পুঁতে, পানিতে চুবিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী, দুই ছাত্রলীগ নেতা এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ভিডিওটি গত ৯ই জুলাই ধারণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

Advertisement

অভিযুক্তরা হলেন- স্থানীয় মাদক কারবারি মুক্তার হোসেন, শলুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ শুভ ও ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান।

নির্যাতনের শিকার দুই যুবক হলেন- শলুয়া ইউনিয়নের মোহন আলী (২৫) ও তার প্রতিবেশী মোশাররফ হোসেন মছু (২২)। নির্যাতনের শিকার দুই ব্যক্তিও মাদকাসক্ত বলে স্থানীয়রা জানায়।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনাটি জানার পর প্রায় মাস খানেক আগে চারঘাট মডেল থানা পুলিশ একটি জিডি করে রেখেছে। এরপর নির্যাতনের শিকার দুই যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ করতে রাজি হয়নি। এর মধ্যে ১৮ আগষ্ট ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানায়, গত ৯ জুলাই দুপুরে পৃথকভাবে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। মোহনকে হাত-পা বেঁধে পানিতে চুবিয়ে নির্যাতন করা হয়। আর মছুকে চোখ-মুখ বেঁধে পেটানো হয়। তবে ভয়ে তারা থানায় অভিযোগ করতে যাননি। কীভাবে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটাও জানেন না তারা।

Advertisement

ভুক্তভোগী মোহনের মা শলুয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ সদস্য নাসিমা বেগম বলেন, জুন মাসের শেষের দিকে প্রতিবেশী পারুলের বাড়িতে থাকা গরু বিক্রির ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা চুরির অভিযোগ করে মছুর বিরুদ্ধে। সেই টাকা উদ্ধারের জন্য মছুকে জিম্মি করে এলাকার প্রভাবশালী মুক্তা ও সোহেল। মছু নিজেকে বাঁচাতে আমার ছেলে মোহনের নাম বলে। গত ৯ জুলাই সকালে আমার ছেলে কাঠ মিলে কাজ করা অবস্থায় তাকে তুলে নিয়ে যায় মুক্তা ও সোহেলসহ তার সহযোগীরা। তারা আমার ছেলেকে হাত-পা বেঁধে ডোবার পানিতে চুবিয়ে ও মাটিতে পুতে সারাদিন নির্যাতন করে।

নির্যাতনের শিকার মোহন বলেন, ঘটনার দুমাস হতে চলল আমার শরীর এখনও অকেজো হয়ে আছে। তারা আমার হাত-পা, মুখ ও চোখ বেঁধে মাটিতে পুঁতে নির্যাতন করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মুক্তার হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে ছিলাম। একটি পক্ষ এই কাজ করে আমার নাম ছড়িয়েছে। আমি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলাম না। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।

ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল ওয়াদুদ শুভর দাবি, রাজনৈতিকভাবে ফায়দা নিতেই তার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে আমি কোনোভাবে সম্পৃক্ত নই।

Advertisement

চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনে খোঁজ খবর নিয়ে আমরা প্রাথমিক ব্যবস্থা নিয়েছি। কোনো ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।