ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শনিবার, ০৫ আগস্ট ২০২৩ : কিছুদিন ধরে ডেঙ্গুতে নাকাল রাজধানীর মানুষ। খালি নেই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের কোনো সিট। দিশেহারা স্বজন ঘুরছেন এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে। সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছেন আইসিইউ, এনআইসিউ, পিআইসিউতে ভর্তি উপযোগী রোগীরা।
Advertisement
জীবন-মরণের এই সংকট মুহূর্ত একটা শ্রেণির কাছে যেন আশীর্বাদ, যারা গড়ে তুলেছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এদের খপ্পরে পড়া রোগী ও স্বজনরা হচ্ছেন নিঃস্ব, কেউবা হারাচ্ছেন সর্বস্ব।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, পিতার কোলে শিশু সন্তানের লাশ। বেরিয়ে আসছেন রাজধানীর শিশু হাসপাতাল থেকে। সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া শিশুর প্রাণ বাঁচাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে রাজধানীতে ছুটে এসেছিলেন সাদ্দাম হোসেন।
স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় এসেছিলেন। কিন্তু প্রাণপণ চেষ্টার পরও বাঁচানো যায়নি শিশুটিকে।
এমন ঘটনা রাজধানীর শিশু হাসপাতালে নিয়মিত হলেও সাদ্দামের ক্ষেত্রে ভিন্ন। এই শিশুসন্তান মারা যাওয়ার পেছনের গল্প আপনাদের জানাতে চাই। ফিরে যেতে চাই দুই দিন আগের ঘটনায়।
সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে দেখা হয় এফডিসির মোড়ে। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ বহন করতে না পেরে মুমূর্ষু শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।
তবে এফডিসির গেটে অ্যাম্বুলেন্সে উঠার কারণ জানা গেলো ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলে। বাহির থেকে আসা অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের সামনে গেলে জরিমানা দিতে হবে। তাই এখানে ওঠা। কতটা অমানবিক হলে এটা করা যায়। কথা বলার একপর্যায়ে শিশুর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। বিষয়টি অত্যন্ত মানবিক হওয়ায় শিশুটিকে কাছের একটি হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করি আমরা।
Advertisement
ডিউটিরত ডাক্তার অপারগতা প্রকাশ করলেন। তারা জানালেন, সেখানে শিশু রোগীর কোনও ডাক্তার নেই। আমরা বাচ্চাটিকে নিয়ে শিশু হাসপাতালে রওনা দেই।
সাংবাদিকসহ শিশু হাসপাতালে আসায় চেষ্টার কোনো কমতি হলো না। কিন্তু জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এবং নার্সদের আপ্রাণ চেষ্টা কোনো কাজে আসলো না। কারণ ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
হাসপাতালে সাংবাদিকসহ আসায় চেষ্টার কমতি না হলেও দুই দিন আগে এই সাদ্দামকেই তারা ফিরিয়ে দিয়েছিল। পাঠানো হয়েছিল পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে।
আমরা গোপনে পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে যাই। জানার চেষ্টা করি কোন এলাকা থেকে কি ধরনের মানুষ চিকিৎসা নেন এখানে। অন্তত ২০ জন রোগীর অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয় আমাদের। অধিকাংশই জানান শিশু হাসপাতাল থেকে তাদেরকে পাঠানো হয়েছে।
সুজনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থানায়। কাজ করেন রাজমিস্ত্রি হিসেবে। স্বল্প আয়ে যেখানে সংসারই চলে না, সেখানে সন্তানের চিকিৎসা নিয়ে নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। জন্মের পর মস্তিষ্কে অক্সিজেন পাচ্ছিল না। তাই নিয়ে গিয়েছিলেন শিশু হাসাপাতালে।
Advertisement
এখন প্রশ্ন হলো শিশু হাসপাতালের আনসার হিসেবে যারা কাজ করেন, পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে তাদের রোগী পাঠানোর কারণ কি?