মশা দমনে ব্যবহার হচ্ছে ফসলের পোকা মারার কীটনাশক (ভিডিও)

SHARE

 

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,রোববার, ২৩ জুলাই ২০২৩ : মশা মারতে রাজধানীর সব জায়গাতেই কামান দাগাচ্ছেন নগর কর্তারা। তবে ঝামেলা বারুদেই। কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, মশা দমনে যে ফরমুলেশনের কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে তা আসলে ফসলে বসে থাকা পোকা মারার।

Advertisement

বাতাসে ভেসে থাকা স্ত্রী ডেঙ্গু মশা মারতে আল্ট্রা লো ভলিউম ফরমুলেশনের কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ রসায়ন বিজ্ঞানীদের। আশার কথা, এতে সাঁই দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

দিনে দুপুরে মশারির ভেতর পড়ালেখা করছে রাজধানীর স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। তাদের এমন কৌশল পড়ায় মনোযোগের জন্য নয়, নিজেকে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষায়।

অবিভাবকরা বলছেন, মহল্লায় মশার ছড়াছড়ি, প্রতিদিনই কেউ না কেউ আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গুতে। তাই জীবনঘাতী এই রোগ থেকে আপন প্রাণ বাঁচাতে করছেন নিজের মতো চেষ্টা।

নগরীর এক বাসিন্দা বলেন, একদিকে লোডশেডিং; অন্যদিকে মশার যন্ত্রণা। বিকেল বেলা ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। এখন দেখি বাইরেও মশার যন্ত্রণায় হাঁটা যাচ্ছে না।

আরেক বাসিন্দা বলেন, পোলাপানকে মশারি টাঙিয়ে ভেতরে রেখে পড়াশোনা করাতে হয়।
অপর বাসিন্দা বলেন, কর্তৃপক্ষের লোকজন সন্ধ্যায় ওষুধ দিয়ে গেলে আবার সকালে মশা হয়ে যায়।

কীটতত্ত্ব বিজ্ঞানীরা বলছেন, অনুকুল পরিবেশে মশার জীবনচক্র ১ সপ্তাহে নেমে আসে। প্রতিটি মশা ১০০টির বেশি ডিম পাড়ে। তাই এটি নিয়ন্ত্রণে পরিবার-সমাজ-নগরভবনের ত্রিমাত্রিক পদক্ষেপ দরকার।

শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গু মশা তার ডিমের মাধ্যমে এ ভাইরাস বহন করতে পারে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এটি বয়ে বেড়াচ্ছে তারা। ফলে এডিশ মশায় ডেঙ্গু আছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যে এলাকায় এসব পাওয়া যাবে, সেখানে আমাদের নিবিড় পদক্ষেপ নিতে হবে।

Advertisement

 

মশা মারতে পারিবারিক কিংবা সামাজিক চেষ্টা নজরে কম এলেও নগরভবন কামান দাগাচ্ছে প্রতিদিনই।  প্রাপ্ত বয়স্ক মশা, লার্ভা দমনে দেয়া হচ্ছে এডাল্টিসাইড ও লার্ভিসাইড।  কিন্তু যে ইমালসিফায়াবল কনসেনট্রেট বা ইসি ফরমুলেশনের কীটনাশক দেয়া হচ্ছে, মশা দমনে তার কার্যকারিতা নিয়ে শঙ্কায় রসায়ন বিজ্ঞানীরা।

তারা বলছেন, এই কীটনাশকগুলো বাতাসে বেশিক্ষণ ভাসতে পারে না। তাদের দাবি, ম্যালাথিয়নসহ যে কীটনাশকগুলোর ব্যবহার হচ্ছে, সেগুলো মূলত ফসলে বসে থাকা পোকা দমনের।

তারা জানান, উড়ন্ত মশা দমনে সারা বিশ্বে আল্ট্রা লো ভল্যুইম বা ইউএলভি ফরমুলেশন ব্যবহার করা হয়। যেটিকে স্প্রে  করলে বাতাসে দীর্ঘক্ষণ ভেসে থাকে এবং কাঙ্ক্ষিত মশাকে মেরে ফেলে।

শেকৃবির কৃষি রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড আব্দুল কাইয়ুম বলেন,  আমরা ইউএলভি ফরমুলেশন ব্যবহার করি। এটি আমেরিকা, কানাডাসহ পৃথিবীর সব উন্নত দেশে ব্যবহার করা হয়। যা ব্যবহার করলে উড়ন্ত যেকোনো কীটপতঙ্গ বিনাশ করা যাবে।

Advertisement

নগরবাসীকে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষায় প্রয়োজনে ইউএলভি ফরমুলেশনের কীটনাশক ছিটানো হবে বলে জানান ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সেলিম রেজা।

তিনি বলেন, ইউএলভি ফরমুলেশন কার্যকরী হলে আমরা এটিই ব্যবহারে উদযোগী হবো। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে কোনোভাবেই ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব না বাড়ে। এ ভাইরাসের অন্যতম বাহক স্ত্রী এডিস মশা। সেটি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।