শেষ দিনে বিক্রির আশায় দড়ি ছাড়ছেন না ব্যবসায়ীরা

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩ : রাজধানীতে পশুর হাটগুলোতে অন্যবারের তুলনায় বেচাকেনায় কিছুটা ভাটা দেখা যাচ্ছে। কোরবানির পশুর অতিরিক্ত দামে এখনও তেমন বেচাকেনা হচ্ছে না। এর ওপর মঙ্গলবার (২৭ জুন) ভোর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে পশুর হাটগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি অনেকটাই কম। এ অবস্থায় শেষদিনের আশায় দড়ি ধরে আছেন বিক্রেতারা।

Advertisement

বিক্রেতারা বলছেন, গত কয়েকদিনে বিক্রি কিছুটা বাড়লেও সরবরাহের তুলনায় পশু বিক্রি সে অর্থে বাড়েনি। আর ক্রেতারাও বলছেন দাম কিছুটা পড়তির দিকে। তবে তা এখনও সহনীয় অবস্থায় নয় বলে দাবি করছেন তারা।

উত্তরা দিয়াবাড়ি হাটে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতাদের জন্য মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে বৃষ্টি। সকাল থেকে কখনও অঝোর ধারায়, আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। তবে বৃষ্টি কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে।
  

দরদামে আটকে আছে বেচা-কেনা

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় বসা ১৯টি হটের প্রায় সব হাটেই বিপুল সংখ্যক গবাদিপশুর সমাগম হয়েছে। তবে বিক্রেতা এবং ক্রেতারা দরদামেই আটকে থাকছেন।

হাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, এক ক্রেতা শুরুতে একটি গরুর দাম ৭০ হাজার টাকা বলেন, এরপর ৮০ হাজার টাকা বললেও বিক্রেতার সব শেষ দাম হলো ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ফলে অগত্যা ফিরে যেতে হলো ক্রেতাকে।

সেই গরু বিক্রেতা জানান, ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা হলে এই গরুটি বিক্রি করা সম্ভব। এ দামের থেকে কমে বিক্রি করলে তার অনেক লোকসান হবে।

Advertisement

দাম বেশি থাকার বিষয়ে বিক্রেতারা জানান, ক্রেতারা গরুর যে দাম বলছে, তাতে তাদের পোষাচ্ছে না। গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় কম দামে পশু বিক্রি করতে চান না তারা। তাছাড়া দেশের উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে বন্যা হওয়ার কারণে গবাদি পশুর পিছনে খরচও বেশি হয়েছে। তাই দাম বেশি হাঁকা হচ্ছে।

ফলে সকাল থেকে হাটে প্রত্যাশার তুলনায় গরু বিক্রি না হওয়ার কথা জানান বিক্রেতারা। তবে আরও একদিন সময় থাকায় তারা আশা করছেন মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে বা বুধবার বিক্রি বাড়বে।

  

দাম কিছুটা কমেছে

তবে গত দুদিনের তুলনায়, ব্যাপারীরা দাম একটু কম হাঁকছেন বলে জানান ক্রেতারা। তারা জানান, দাম কিছুটা পড়তির দিকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়তো দাম আরও কমবে। যদিও তাদের দাবি, সেই দামও সহনীয় নয়।

গরুর দাম বেশি থাকার অভিযোগ করে এক ক্রেতা বলেন, গত বারের তুলনায় এবার গরুর দাম ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি হাঁকা হচ্ছে।

উত্তরা দিয়াবাড়ি হাটের মতো, রাজধানীর বেশিরভাগ হাটের অবস্থা একইরকম। বৃষ্টির কারণে হাটগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক কম। কখনও মুষলধারে, আবার কখনও ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি মাড়িয়ে, এরপরও যারা হাটে আসছেন তারাও দামের সঙ্গে মিলিয়ে পছন্দমতো গরু মিলাতে পারছেন না।

 
এক ক্রেতা বলেন, ‘গরুর দাম চড়া। যে দাম চাচ্ছে তা দমাদামি করেও কমানো যাচ্ছে না। এত দামে গরু কেনা দুস্কর।’
তবে আগের দুই দিনের তুলনায় গরুর দাম কিছুটা কমার কথাও জানান ক্রেতারা। এক ক্রেতা বলেন, গরুর দাম তো অনেক ছিল, তবে এখন কিছুটা কমছে।
  

গরু অনেক, বিক্রি কম

হাটের এক বিক্রেতা বলেন, ‘আমি দুইটি গরু বিক্রি জন্য নিয়ে এসেছি। তার মধ্যে একটি বিক্রি করতে পেরেছি। আরেকটি এখনও বিক্রি করতে পারিনি। তবে সকাল থেকে বৃষ্টি। এর জন্য ক্রেতা কম।’


আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘তিনদিন হলো এসেছি। এখন পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি করতে পারিনি। ফলে গরুর খাওয়া ববাদ তো খরচ হচ্ছেই।’

হাটে ৩৭টি গরু এনেছেন জানিয়ে এক বিক্রেতা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি করতে পারিনি। বাড়ি যাওয়ার ভাড়াও আয় হয়নি।’

তবে শেষদিনে সব গরু বিক্রি হবে বলে বিশ্বাস এই বিক্রেতার। 

আগামী বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উদ্‌যাপিত হবে। এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে ১৯টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে।

Advertisement