ভূমি কর্মকর্তার অফিস করেন স্বামী, ভিডিও ভাইরাল

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি ,বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩ : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদারের বিরুদ্ধে তার পরিবর্তে স্বামীকে দিয়ে নিয়মিত অফিস করানোর অভিযোগ উঠেছে। ৪ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের তার অফিস কক্ষের এমন একটি ফেসবুক লাইভ ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধমে ভাইরাল হয়।

অভিযুক্ত লিখি মজুমদার উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা। তার স্বামীর নাম ভবরঞ্জন মজুমদার।  তিনি পেশায় একজন সাবেক মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ। তারা একই উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রসন্ন পন্ডিত বাড়ির বাসিন্দা।

বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী ফেসবুক আইডি থেকে এই লাইভ প্রচার করেন।

লাইভে দেখা যায়, মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী তার ইউনিয়নের মুছাপুর ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদারের স্বামীকে তার চেয়ারে বসে কাজ করতে দেখে অফিসে ঢুকে প্রথমে তাকে তার নাম জিজ্ঞেস করেন।  তখন তিনি জানান, তিনি ভবরঞ্জন মজুমদার। মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদারের স্বামী। এরপর চেয়ারম্যান তাকে জিজ্ঞাসা করেন আপনি এখানে কেন আসছেন। তখন তিনি চেয়ারম্যানকে জানান, তিনি অনলাইনে কাজ করছেন।

এ সময় চেয়ারম্যান লাইভে অভিযোগ করেন, লিখি মজুমদার তার কর্মস্থলে থাকেন না।  এখানে তার স্বামী মানুষের কাজ করে তাদের সেবা দেন। ওই লাইভে চেয়ারম্যান প্রশ্ন রাখেন, সরকারের কি এমন কোনো নীতিমালা আছে যে কর্মকর্তা অফিসে না থাকলে তার স্বামী অফিস করবেন।

লাইভে আরও দেখা যায়, ভবরঞ্জন মজুমদার স্বীকার করেন তিনি তার স্ত্রীর পরিবর্তে কাজ করছেন। তাৎক্ষণিক চেয়ারম্যান এই অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিকার চান উপজেলা ও জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে। ওই সময় সেবা প্রার্থী একাধিক ব্যক্তি জানান, তিনি তার স্ত্রীর পরিবর্তে মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারীর কাজ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদার বলেন, আমার স্বামী আমাকে প্রত্যেক দিন সকালে অফিসে নিয়ে আসে এবং বিকালে নিয়ে যায়। আমি আজকে অফিসের কাজে একটি তদন্তে গিয়েছিলাম। এজন্য আমার স্বামীকে বলেছিলাম একটু অপেক্ষা কর। আসলে কথাবার্তা বলে চলে যাবে। আমি তদন্ত করে আসতে একটু সময় লেগেছে।  এরপর ওনারা গিয়ে তাকে পাশের চেয়ারে বসা পাইছে। আমার চেয়ারটা খালি ছিল। সামনে কম্পিউটার ছিল। সে আবার কম্পিউটার জানে। লোকজনে হয়তো নাগরিক নিবন্ধন করাতে চেয়ে ছিল।  হয়তো বা এ রকম কিছু। এখন কি বুঝে চেয়ারম্যান লাইভ করেছেন, আমি তো ছিলাম না বলতে পারব না। আমার সঙ্গে কি ওনার শত্রুতা আমি বুঝতে পারছি না।’

Advertisement

 

মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী বলেন, লিখি মজুমদারের স্বামী প্রত্যেক দিন এখানে তার স্ত্রীর পরিবর্তে অফিস করেন।  সে বিষয়টি লাইভে স্বীকার করেছেন। লিখি মজুমদার বুধবার অফিসে আসেননি। তার তদন্তে যাওয়ার কথাটি মিথ্যা-বানোয়াট।

মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিষয়টি জানেন।  উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) একদিন অফিস পরিদর্শনে এসে উপ-সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদারের স্বামীকে অফিসে কাজ করতে দেখেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পিয়াস চন্দ্র দাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেননি।

Advertisement

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনায় কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।