ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজশাহী প্রতিনিধি,সোমবার, ১৯ জুন ২০২৩;রাজশাহীর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেনের বাসায় আওয়ামী লীগের নেতাকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই নেতাকে পুলিশ এসে উদ্ধার করে। নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা। রোববার (১৮ জুন) রাত সাড়ে দশটার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বাসায় ঢোকেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন। তখন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এসে তাকে সেখানে অবরুদ্ধ করেন। রাত ১২টার দিকে পুলিশ এসে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
জানা গেছে, আগামী ২১ জুন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে রাজশাহী মহানগরীর ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল হামিদ সরকার টেকনের পক্ষে তার ভাগনে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইসতিয়াক আহমদ লেমন সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বাড়িতে টাকা লেনদেন করছেন এমন অভিযোগে তুলে বাড়ি ঘেরাও করে রাখে এলাকাবাসী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
Advertisement
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় ভেতরে গিয়ে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা মোবাইলে ভিডিও করতে থাকেন। পরে মীর ইসতিয়াক আহমদ লেমনকে সেই বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় দেড় ঘণ্টা। রাত ১২টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে হেফাজতে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে চলে যায়। এর পরই সাংবাদিকদের সেই বাড়িতে প্রবেশ করানো হয়।
ভেতরে থাকা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, রাস্তায় লেমনের সঙ্গে তার দেখা হয়। তিনি বাসায় গিয়ে কথা বলার অনুরোধ করলে লেমন তার সঙ্গে দ্বিতীয় তলায় উঠে যায়। তবে নির্বাচনে মামা ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল হামিদ সরকার টেকনের পক্ষে তিনি কোনো কথা বলেননি বলে নিশ্চিত করেন এই নির্বাচন কর্মকর্তা। যারা শুরুতে তাদের বাড়িটির ভেতরে অবরুদ্ধ করেন সেই ছাত্রলীগ নেতারাও অবশ্য টাকা লেনদেনের কোনো প্রমাণ দিতে পারেন নি। তারা ধারণা করেছেন এখানে ভোট প্রভাবিত করতে টাকা লেনদেনের প্রস্তুতি চলছিল।
সহকারী রিটারনিং কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেছেন, শুধুমাত্র সন্দেহের বশে কিছু লোক এ ঘটনা ঘটিয়েছে। লেমন রাজশাহী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মীর ইকবালের ছেলে। তিনি কথা বলতে চাইলে না করতে পারেন নি নির্বাচন কর্মকর্তা। এছাড়া ২২ নম্বর ওয়ার্ড তার আওতার মধ্যে নেই জানিয়ে বলেন, তিনি ৯ থেকে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সহকারী রিটারনিং কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন এখানে ২২ নম্বরে তিনি কি করে প্রভাব বিস্তার করবেন। তবে এ ঘটনার পর দীর্ঘক্ষণ ছাত্রলীগের কর্মীরা বাড়িটি ঘিরে ধরে ছিলেন। সকাল পর্যন্ত সেখানে পুলিশি প্রহরা দেখা গেছে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে রাতে কেউ কথা বলতে রাজী হননি।
Advertisement
তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন সূত্র জানিয়েছে, আদতে সে কি করতে সেখানে গিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে। সকালে এ বিষয়ে কাজ শুরু করবেন তারা। মূলত রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা ডাবলু সরকারকে নিয়ে মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক মহানগর সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের দ্বন্দ্ব দীর্ঘ দিনের। একটি অশ্লীল ভিডিওকে কেন্দ্র করে ডাবলু সরকারকে রাজনীতিতে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ ডাবলুর। ডাবলু সরকারের ভাই এবার সিটি নির্বাচনে ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল হামিদ সরকার টেকন। এক পক্ষ বলছে রাজনীতিতে এই পরিবারটিকে দাবিয়ে রাখতেই এমন কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে।